কুমিল্লার দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে উপজেলাগুলোর পৌরশহরসহ হাট-বাজারগুলোতে জনচলাচলে এলাকার পরিবেশ দূষন ও মানবদেহে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার অভিযোগ উঠেছে হলুদ-মরিচের গুড়া ভাঙ্গানো মিল মালিকদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে লাকসাম পৌরশহরের পুরাতন দৈনিক বাজার এলাকায় যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে ওইসব মিল।
উপজেলাগুলোর স্থানীয় ভাবে ভুক্তভোগীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ ব্যাপারে বহুবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। বিশেষ করে উপজেলার গুলোর প্রতিটি হাট-বাজারে ধান ভাঙ্গানোর মিল কিংবা নতুন নতুন প্রযুক্তি নির্ভর নানা ব্র্যান্ডের ছোট ছোট মিল বসিয়ে চাউলের গুড়া, হলুদ, মরিচ, ডাল ও মসল্লার গুড়া ভাঙ্গানো হচ্ছে।
তবে পৌরশহর দৌলতগঞ্জ পুরাতন দৈনিক বাজারের চর্তুরপাশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত নাজুক অবস্থার শিকার হতে হচ্ছে। ওইসব মিল চলাকালে বাতাসে হলুদ মরিচের ঝাঁজ উড়ে এসে ব্যবসায়ীদের দোকানে পড়ে এবং পথচারীদের জনচলাচলের ক্ষেত্রে আরও বিপাকে পড়তে হয়। কে শুনে কার কথা, ওইসব মিল মালিকদের দৌরাত্ব প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বিগত কয়েক বছর যাবত তাদের দৌরাত্ব কমাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন কিংবা কোন সংস্থার লোকজন।
সূত্রগুলো আরও জানায়, ওইসব মিলে ভাঙ্গানো হলুদ মরিচের গুড়া বাহিরে বাতাসের সাথে মিশে এলাকার পরিবেশ দূষন এবং এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে। এরফলে এলাকার নারী-পুরুষসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের শ্বাসকষ্ট, চোখের নানা সমস্যা, নিউমনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানাহ রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশংকা করছেন কেউ কেউ।
এছাড়া কিছুদিন পূর্বে ওইসব মিলে ভাঙ্গানো মরিচের গুড়া জনৈক পথচারীর চোখে পড়ে চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জনচলাচলে পথচারী কিংবা ব্যবসায়ীদের এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠা ওইসব মিলগুলোর মালিকরা সরকারি কোন নিয়মনীতি মানছে না। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে স্থানীয় পেশীশক্তির বদৌলতে তাদের এসব ব্যবসা চালাচ্ছেন তারা।
প্রতিনিয়ত ওইসব এলাকার সড়ক দিয়ে হাজার হাজার পথচারী জনচলাচল করলেও ওইসব মিলে নেই কোন সর্তকতা কিংবা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওইমিল গুলোর পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারী ও আশে পাশের ব্যবসায়ীরা। জনসাধারনের এ ভোগান্তিতে যেন কোন সংস্থার মাথাব্যাথা নেই।
স্থানীয় একাধিক পরিবেশবিদদের সূত্র জানায়, ওইসব মিল মালিকদের বেপরোয়া দৌড়াত্বে আশে পাশের লোকজন হাঁচি ফেলতে ফেলতে বুকে শ্বাসকষ্ট উঠে যায়। ওই মিলে যে সব পন্য ভাঙ্গিয়ে গুড়া করা হয় তাতেই ভেজাল। ইটের গুড়া, কাঠের গুড়া, নিম্নমানের ডালের গুড়া মিশ্রণে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন। পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ দূষনসহ মানবদেহের স্বাস্থ্যঝুঁকিতো আছেই যা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাদের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ভোরের আকাশ/নি