logo
আপডেট : ৪ মে, ২০২৩ ১৫:১১
কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে সীতাকুন্ডের প্রকৃতি
সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে সীতাকুন্ডের প্রকৃতি

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপ সীতাকুন্ডকে আলাদাভাবে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে কৃষ্ণচূড়া। যেন লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি। গ্রীম্মের সেই নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে নিজেকে মেলে ধরেছে আপন মহিমায়। ফুলের সৌন্দর্য এঁকে দেয় শিল্পীর নরম তুলি। গ্রীম্মের তীব্র গরম আর অবিরাম উষ্ণতায় যখন সমগ্র দেশ স্থবির ঠিক তখনই জেগে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিমতা।

 

প্রতিবছর মে-জুন মাসে এমন রূপের দেখা মেলে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডিভাইঢারসহ সমগ্র উপজেলায়। এ যেন লাল গালিচায় স্বাদর আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে ভ্রমণপিপাসু অতিথিদের। গ্রীষ্মের তীব্র গরমের ক্লান্তি দূর করতে ফুলের সৌন্দর্যে বিমুগ্ধ নয়নে কৃষ্ণচূড়ায় ঠাঁই নেয় পথচারীরা।

 

পৌরসভা সংলগ্ন দিঘির উত্তর-পূর্ব কোণে ফুলে ফুলে রঙিন বিশাল কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষটি পথচারীদের বিনোদনের বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক, চন্দ্রনাথ পাহাড় এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডিভাইডারসহ উপজেলার সর্বত্র কম-বেশি বাহারি কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে। স্নিগ্ধ সকাল, তপ্ত দুপুর কিংবা গৌধূলী বেলায় কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য অবলোকন করে পথচারীরা। স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রাঙ্গণ সাজিয়ে নিয়েছে কৃষ্ণচূড়ায়।

 

উপজেলায় কি পরিমাণ কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষ রয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য, উপাত্ত না থাকলেও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, অতীতে গ্রাম-গঞ্জে হাজার হাজার কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষ থাকলেও সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা এখন শতাধিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে।

 

বাড়বকুন্ডের নতুন পাড়াস্থ বৃক্ষপ্রেমী কাজী মো. হানিফ বলেন, অবসরে ঘুরাফেরা শেষে মনের ক্লান্তি দূর করতে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে আশ্রয় নিই। বাচ্চারা লালে-লাল ফুলগুলো নিয়ে খেলা করে মনের আনন্দে মেতে উঠে, যা সত্যি উপভোগ্য।

 

তিনি বলেন, দুঃখ হলেও সত্য যে, প্রকৃতির সৌন্দর্যমন্ডিত এ গাছগুলো অবাধে কাটা হলেও বৃক্ষরোপণের তালিকায় তেমন একটা স্থান পাচ্ছে না। গ্রামগঞ্জ ও পৌর এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো সংরক্ষণ ও বনায়নে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

 

পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দিদারুল আলম এ্যাপোলো জানান, কৃষ্ণচূড়া একসময় পৌর এলাকাকে রাঙিয়ে তুলত। ঝড়ে পড়া ফুলগুলো পাকা সড়কে এমনভাবে পড়ে থাকত যেন কেউ পৌরবাসীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় কৃষ্ণচূড়ার ঐতিহ্য ও জৌলুস আর নেই। গৃহায়ণ-নগরায়নে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বনায়নের উপযোগী ভূমি। তাতেই বৃক্ষরোপণের তালিকা হতে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে কৃষ্ণচূড়ার মতো সৌন্দর্যবন্ধক ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষগুলো।

 

উপজেলার টেরিয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন চক্রবর্তী জানান, কৃষ্ণচূড়ার রূপ-রসের সৌন্দর্য শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে নয় বরং পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিদেরও করছে বিমোহিত। আর কৃষ্ণচূড়ার রঙিন ফুলে সৃষ্টি করেছে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ। ছোট বেলা থেকেই বৃক্ষের প্রতি রয়েছে আমার বিশেষ দুর্বলতা।

 

বাড়ির সামনে বিশাল কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষটি ছোট বেলা থেকেই আমাকে আনন্দ দিয়ে আসছে। সম্প্রতি বসতঘর সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে কর্তন হওয়ায় হারিয়ে ফেলি বহু বছরের দৃষ্টিনন্দন বৃক্ষটি। তিনি নান্দনিক বৃক্ষগুলো সংরক্ষণ ও বনায়নে বিশেষ ভাবে গুরুত্বারোপ করেন।

 

ভোরের আকাশ/নি