logo
আপডেট : ৬ মে, ২০২৩ ১৫:১৪
খোলা রাস্তায় চলে ওয়েল্ডিং, দুর্ভোগে পথচারীরা
মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম (কুমিল্লা)

খোলা রাস্তায় চলে ওয়েল্ডিং, দুর্ভোগে পথচারীরা

নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে এভাবেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ওয়েল্ডিং কারখানা

কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাটবাজারজুড়ে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার ওয়েল্ডিং কারখানা।

 

বিশেষ করে স্থানীয় সার্বিক প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে জেলার ৫টি উপজেলার হাটবাজারগুলোতে প্রধান প্রধান সড়কের ওপর প্রকাশ্যে খোলা রাস্তায় ওয়েল্ডিং কারখানার মালিকদের নিবন্ধন বিহীন অবৈধ ব্যবসাটি সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।

 

ফলে প্রতিনিয়ত এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে অথচ রাজস্ব বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে নীরব দর্শকের ভূমিকায়।

 

স্থানীয় পথচারীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বিভিন্ন ধরনের ওয়েল্ডিং কারখানার শ্রমিকরা প্রকাশ্যে সদর রাস্তার ওপর তাদের যাবতীয় ওয়েল্ডিং কাজকর্ম করে যাচ্ছে। ফলে বেগুনী আলোক রশ্মি পথচারীসহ আশপাশের ব্যবসায়ীদের অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

 

আবার সড়কগুলোর অধিকাংশ জায়গায়ই ওয়েল্ডিং কারখানা মালিকদের জবরদখলে চলে গেছে। এসব কলকারখানায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার জন্য চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক কৌতূহলী স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোর, ছাত্রছাত্রীরা এ ওয়েল্ডিং চিত্র দেখার জন্য আশপাশে ভিড় জমাচ্ছে। ফলে ওইসব আলোক রশ্মি চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে এ অঞ্চলে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত চক্ষু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে স্থানীয় চশমা বিক্রেতা ও ডাক্তারগণের দাবি।

 

সূত্রগুলো আরো জানায়, বর্তমান সরকার পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও জেলা দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এ ব্যাপারে তেমন কোনো আন্তরিকতা দেখা যায়নি। অথচ এ অঞ্চলের হাটবাজারগুলোতে এসব সৃষ্ট অব্যবস্থা সম্পর্কে ভুক্তভোগী লোকজন ওইসব অবৈধ ওয়েল্ডিং কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বহু অভিযোগ দায়ের করলেও এ ব্যাপারে টনক নড়েনি তাদের।

 

বরং অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে ওইসব কারখানা মালিকদের অপতৎপরতা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের পরিবেশ নষ্টকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন পুরাতন মালামাল ক্রয় করে ওয়েল্ডিং মেশিনের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে নতুনভাবে বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করে মোটা অংকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। ওইসব অবৈধ কারখানা মালিকদের রাজস্ব বিভাগ, ফায়ার ব্রিগেড, পরিবেশ, শ্রম ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা ৫টির স্থানীয় হাটবাজার কমিটিসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ব্যবসায়ী মহল। এ দিকে লাকসাম, নাঙ্গলকোট ও বরুড়া পৌর এলাকা উন্নয়নে বর্তমান সরকার কয়েকশ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে।

 

অথচ কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে সড়ক, কালভার্ট ও ড্রেনগুলো এবং পথচারীদের চলাচলে ফুটপাতে ওইসব অবৈধ ওয়েল্ডিং কারখানা মালিকরা তা জবরদখল করে তাদের তাদের অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছে।

 

এ ছাড়া ফুটপাতগুলো যানজটের কবলে পড়ে পথচারী জনচলাচলে মারাত্মক অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ এসবের দিকে নজর নেই। এ ব্যাপারে পৌর ও জেলা-উপজেলাগুলোর প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত কিংবা আইনি ব্যবস্থায় রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপ রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি