logo
আপডেট : ৮ মে, ২০২৩ ১৯:৩৭
কুমিল্লার উন্নয়নে অর্থনৈতিক জোনের বিকল্প নেই
মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম (কুমিল্লা)

কুমিল্লার উন্নয়নে অর্থনৈতিক জোনের বিকল্প নেই

কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোনের মডেল

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম (কুমিল্লা): কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলে ৫ উপজেলায় প্রয়োজনীয় শিল্পায়নের অভাবে হাজার হাজার যুবক বর্তমানে কর্মহীন জীবনযাপন করছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলেও এ অঞ্চলে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে এ অঞ্চলে বেকার যুবকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। লাকসাম শহরে সরকারিভাবে গড়ে উঠা হাউসিং এস্টেট বর্তমানে বাণিজ্যিক নগরীতে পরিণত হলেও উপেক্ষিত রয়ে গেছে লাকসামে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার দাবি। কুমিল্লার উন্নয়নে অর্থনৈতিক জোনের বিকল্প নেই বলে অভিমত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

বর্তমান সরকার এ পৌরসভার উন্নয়নে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে। এমনকি স্মার্টসিটি হিসেবে গড়ে তুলতে এ নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। বর্তমানে জেলার দক্ষিণাঞ্চলের ৫ উপজেলায় ব্যবসা-বাণিজ্যে নানা কারণে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

 

স্থানীয়ভাবে এখানে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় বেকারত্বের পাশাপাশি দারিদ্রতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারিভাবে লাকসামে বিসিক শিল্প নগরী স্থাপন ও স্থানীয় শিল্পোদ্যক্তারা আন্তরিক হলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে এলকাবাসীর দাবি। রেল, নৌ ও সড়ক যোগাযোগ, অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ, স্থানীয় কাঁচামালের অপার সম্ভার, আবাদি কৃষি জমিসহ নানা সুবিধার দিক দিয়ে এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও শিল্পকারখানা স্থাপনে উদ্যোগ নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বিভিন্ন দলীয় সরকার ক্ষমতায় এসে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটালে বেশ কিছু শিল্পকারখানা স্থাপন হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো শিল্পকারখানা গড়ে উঠেনি।

 

দক্ষিণ কুমিল্লার সুনামধন্য শিল্পদ্যোক্তা ভাইয়া গ্রুপ, শাহজালাল গ্রুপ, রূপসা গ্রুপ, লোটাস কামাল গ্রুপ, আজাদ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, ফেবিয়ান গ্রুপ, আলানা গ্রুপ, ফেমাস গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, এসওএস গ্রুপ, চৈতি গ্রুপ, মরহুম চাঁন মিয়া ও সুরুজ মিয়ার পরিবারসহ এ অঞ্চলের বিত্তশালী পরিবারগুলো একটু আন্তরিক হলে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার প্রভুত উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন।

 

কৃষিপ্রধান এলাকা হিসেবে বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার নাঙ্গলকোট, লালমাই ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় কৃষি ও মৎস্য ভিত্তিক বিনিয়োগের চাহিদা ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে অল্প খরচে স্বল্প সময়ে ব্যাপক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব। ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র নারী নবাব নওয়াব ফয়জুন্নেছার জন্মস্থানখ্যাত লাকসাম শতাব্দিকাল থেকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ ঐতিহ্য বহন করছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে বহু সরকার প্রধান, শত শত মন্ত্রী, আমলা, এমপি এ অঞ্চলে পদচারনাকালে লাকসামকে শিল্পনগরী গড়ে তোলার আশ্বাস দিলেও তা লাল ফিতায় বন্দি হয়ে রয়েছে।

 

এখানে বসবাস ছিল এ অঞ্চলের অন্যতম কৃতি সন্তান সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবদুল আউয়াল, সাবেক এমপি জালাল আহমদ, অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার, ব্যারিস্টার হাবিবুল হক, প্রফেসর নুর উর রহমান, ওমর আহমদ মজুমদার, ভাষাসৈনিক কমরেড জিন্নতের রহমানসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তি।

 

বর্তমানে রয়েছেন কুমিল্লা-৯ আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও শিল্পপতি মো. তাজুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম মজুমদার হেলাল, সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজিম, (নিখোঁজ) সাবেক এমপি আলহাজ সাইফুল ইসলাম হিরু, সাবেক এমপি মরহুম এটিএম আলমগীর, সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী, সাবেক এমপি মরহুম ডা. রফিকুল হোসাইন, সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া, সাবেক এমপি মরহুম জয়নাল আবদীন ভূঁইয়া ও সাবেক এমপি ডা. কামরুজ্জামানসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যাক্তিত্ব।

 

ভোরের আকাশ/আসা