logo
আপডেট : ৯ মে, ২০২৩ ১৭:৪৭
তদবির করে উপজেলা থেকে ঢাকায় আসা বন্ধ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

তদবির করে উপজেলা থেকে ঢাকায় আসা বন্ধ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

তদবির করে উপজেলা পর্যায় থেকে বদলি নিয়ে ঢাকায় আসা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সেবার মান না বাড়িয়ে দেশের মানুষের জন্য কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করা অসম্ভব।

 

মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদীর একটি বেসরকারি রিসোর্ট সেন্টারে ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ঢাকা বিভাগীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের সঙ্গে মতবিনিময় তিনি এ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

মন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালের কাঙ্খিত সেবা বাদ দিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন সম্ভব না। অথচ উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাতেই আমাদের মুল ঘাটতি রয়ে গেছে। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অনেক জায়গাতেই মেশিন নষ্ট ছিল। কিছু জায়গায় তো মেশিনই ছিল না। লোকবলের তীব্র অভাব ছিল। উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তাররা বদলি নিয়ে ঢাকা বা জেলা পর্যায়ে চলে যেত। এগুলো আমরা আগে বুঝতে পারিনি। এখন দেশের ৮ টি বিভাগের বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবার মান সরেজমিনে পরিদর্শন করে ও ঘুরে ঘুরে দেখে এগুলো আমরা জানতে পেরেছি। এজন্য জেলা পর্যায়ের মতো করে উপজেলা পর্যায়ে আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি। নষ্ট মেশিন মেরামত করা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন মেশিন কেনা হয়েছে। তদবির করে উপজেলা পর্যায় থেকে বদলি নিয়ে ঢাকায় আসা বন্ধ করা হয়েছে।

 

পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান ও ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেয়ার কাজ চলকান আছে। উপজেলা পর্যায়ে বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা, ডায়ালাইসিস বেড দেয়া, উপজেলা হাসপাতালেই অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করার উদ্যোগ নেয়াসহ নানাবিধ কাজ করে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান দ্বিগুণ বাড়ানো হচ্ছে। কারন আমরা বুঝে গেছি, উপজেলা পর্যায়ে সেবার মান না বাড়িয়ে দেশের মানুষের জন্য কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করা অসম্ভব।

 

স্বাস্থ্যখাতের সেবার মান বৃদ্ধি করার গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়, অনেক টাকা খরচ করে নি:শ্ব হয়ে যায়। অথচ আমাদের দেশে বড় বড় সরকারি হাসপাতাল আছে, দামী দামী যন্ত্রপাতি আছে, দেশে নামকরা চিকিৎসকও আছে। এখন শুধু আপনাদের (চিকিৎসক ও হাসপাতাল পরিচালক, স্বাস্থ্যখাতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা) সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা লাগবে। সরকার আপনাদের জন্য সবকিছুই করবে। কিন্তু আপনাদের এই আন্তরিকতা থাকতে হবে মন থেকে। নেতৃত্ব দিতে হবে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো করে মনে দেশপ্রেম নিয়ে। শেখ হাসিনা যেমন শত বাধা উপেক্ষা করেও দেশের দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়ে দেশকে উন্নত দেশে পরিনত করতে দিনরাত নির্ভিক কাজ করে যাচ্ছেন, নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে যাচ্ছেন, আপনাদেরকেও সেভাবে কাজ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, যিনি যে হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্যখাত পরিচালনায় দায়িত্ব পাবেন তাকে সেই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার সকল দায়ভার নিতে হবে। হাসপাতাল অপরিচ্ছন্ন থাকলে, মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেলে এর জন্য নিজের বিবেকের কাছে দায়ী থাকবেন, আমরাও এগুলো মনিটর করে ব্যবস্থা নিব। এজন্য এমনভাবে সেবা দিতে হবে যাতে আগামীতে বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশেই বিদেশিরা চলে আসে।

 

মন্ত্রী বলেন, আপনারা করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছেন, আর একটু আন্তরিক হলেই চিকিৎসা সেবাতেও সফল হবেন। আপনাদের একটু প্রচেষ্টাতেই দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবেন। মানুষের অনেক কষ্টের টাকাও বেচে যাবে।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক আহমেদুল কবীর, সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া।

 

এছাড়া সভায় ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার সিভিল সার্জনস, জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, এবং ৭৬ টি উপজেলা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/নি