logo
আপডেট : ১০ মে, ২০২৩ ১৬:৩৯
অসহনীয় গরমে তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে
নিজস্ব প্রতিবেদক

অসহনীয় গরমে তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে

রাজধানী জুড়ে তীব্র যানজট এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গি। যানজটের কারণে প্রতিদিনই নাজেহাল হচ্ছে নগরবাসী। প্রচন্ড গরমে অসহনীয় যানজট মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। যানজট প্রধান সড়ক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে অলিগলিতেও। ফলে তীব্র গরমে ও অসহনীয় যানজট জনজীবনের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।

 

বুধবার তীব্র গরমের মধ্যে অসহনীয় যানজটে এ চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর সাইন্সল্যাব মোড়, বাংলামটর, পান্থপথ, মালিবাগ, রামপুরা, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল, গুলিস্থান, পল্টন, বিজয়নগর, মৎস্য ভবন, শাহাবাগ, ফার্মগেট এবং বিজয়সরণিসহ বিভিন্ন সড়কে।

 

সকাল সাড়ে নয়টায় মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। একই সময় রাজারবাগ মোড়, ফকিরাপুল, মতিঝিল এবং কমলাপুরের মতন এলাকায়ও তীব্র যানজট দেখা গেছে। মূলত অফিস সময় হওয়ায় তখন যাত্রী চাপটা কিছুটা বেশি ছিল। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ সামলাতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিকদেরও অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে।

 

পাশাপাশি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু স্থানে থেমে থেমে যানজটের তীব্রতা বাড়তে দেখা গেছে। কিছু কিছু স্থানে জ্যাম ফ্লাইওভার পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। বেসরকারি চাকরিজীবি ওমর ফারুক গাজীপুর থেকে সকাল ৯ টায় আজমেরী গ্লোরি বাসে করে পল্টন আসেন অফিস করার জন্য।

 

তার প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছে অফিস পৌঁছাতে। গাজীপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত তেমন একটা জ্যাম ছাড়াই আসতে পারলেও মহাখালী থেকে পল্টন পর্যন্ত আসতে তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে তাকে। বিশেষ করে মহাখালী থেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত তীব্র জ্যাম ছিল।

 

তিনি বলেন, ভাই এত গরম যে রোদের নিচে দাঁড়ানো যায় না। ঢাকা শহরে গাছও নাই যে একটু ছায়ার নিচে দাঁড়াব। তার ওপর রাস্তায় চললে মনে হয় কেউ যেন গরম বাতাস করছে। আর রাস্তায় বাস কিছুক্ষণ পরপর যাত্রী ওঠানামা করায় পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছে।

 

এদিন অসহনীয় গরমে গণপরিবহনগুলোয় দেখা গেছে মারাত্মক অব্যবস্থাপনা। ধারণ ক্ষমতার থেকে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করছে বাসগুলো। পাশাপাশি সড়কের যানবাহনের নানা অব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে অসহনীয় গরম অসুস্থ করে দিচ্ছে সাধারণ জনগণকে।

 

তীব্র গরমে খিলগাঁও রেলগেট থেকে ফকিরাপুল রিকশা চালিয়ে এসেছেন মো. শাহাদাত। তীব্র গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে রিকশা চালানো বন্ধ রেখেছেন কিছু সময়ের জন্য।

 

তিনি বলেন, যে গরম পড়ছে তাতে একটানা রিকশা চালানো কষ্টকর। তারপর রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম থাকে। যে কারণে একটা ক্ষেপ মারতেই অনেক সময় লেগে যায়। দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা চালালেও বাজারের খরচের টাকা হয় না। তার ওপর রিকশার জমা দিতে হয় দেড়শ টাকা করে।

 

রাজারবাগ মোড়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তীব্র জানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন সেখানে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম।

 

তিনি বলেন, অফিসের সময়, পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা থাকার কারণে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজারবাগ চার রাস্তার মোড়ে প্রচন্ড যানজট ছিল। এই গরমে ডিউটি করতে কষ্ট হয়। তার ওপর গাড়ির চাপও থাকে প্রচুর।

 

বিভিন্ন সময় যানজট থেকে নিস্তার মিললেও গরম থেকে এত সহজে মিলছে না। রাস্তায় বেরোলেই বোঝা যায় গরমের তীব্রতা। একে তো প্রখর রোদ, তার ওপর রাস্তা থেকে বের হওয়া তাপে সড়কের সবাই চরম অতিষ্ঠ।

 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনে তাপদাহ আরও বাড়বে। এরপর তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা হিট স্ট্রোকসহ গরমজনিত নানা রোগ প্রতিরোধে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি