logo
আপডেট : ১৩ মে, ২০২৩ ১৫:৪৯
মোখা আতঙ্কে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ
বরগুনা প্রতিনিধি

মোখা আতঙ্কে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ

বরগুনা সদরের বালিয়াতলী এলাকার ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ইসমাইল মৃধা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কাছে গিয়ে রাত-দিন বসে পাহারা দিচ্ছেন কখন পানি আসবে

উপকূলীয় জেলা বরগুনা দেশের সর্ব দক্ষিণের সাগর তীরবর্তী এলাকা প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এখানকার সাধারণ মানুষ, জেলে ও কৃষকরা।

 

অভিযোগ রয়েছে, বিগত দিনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডর, মহাসেন, আইলা, রোয়ানু ও মোরার সময় আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্যের সঙ্গে ঝড়ের গতি ও স্থান পরিবর্তনের অমিল ছিল অনেক। বরগুনা দুর্যোগপ্রবণ একটি জেলা হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস পায়নি উপকূলীয় এ জেলাটিতে। ফলে সঠিক সময়ে সঠিক পূর্বাভাস না পেয়ে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হচ্ছে দক্ষিণের এই মানুষ ও জনপদগুলো।

 

বরগুনা সদরের বালিয়াতলী এলাকার ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ইসমাইল মৃধা, আবহাওয়া অফিস না থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেলেই জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কাছে গিয়ে রাত-দিন বসে পাহারা দিতে হয় কখন পানি আসল। বরগুনা জেলায় একটি আবহাওয়া অফিস আমাদের খুব দরকার।

 

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বরগুনা একটি উপকূলীয় জেলা। এখানে কয়েক হাজার মানুষ আছেন। সঠিক পূর্বাভাস না পেয়ে জীবন দিতে হচ্ছে সাধারণ জেলেদের।

 

বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, আবহাওয়া অফিস না থাকায়, সঠিক সময়ে পূর্ভাবাস না পাওয়ায় সাগর তীরবর্তী এলাকার জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

 

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আবহাওয়ার অফিস না থাকার কারণে সঠিক সময়ে জেলের সঠিক সংকেত না পাওয়ায় নদ-নদীতে থাকা জেলেদের আমরা তথ্য দিতে পারি না। ফলে প্রতি বছরই ঝড়ের কবলে পড়ে বহু জেলে ট্রলার ডুবিতে মারা যাচ্ছেন।

 

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, এ জেলায় আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস না থাকার কারণে প্রায়ই আমাদের জনগণের তোপের মুখে পড়তে হয়। ঢাকা থেকে আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করতে যে সময় লেগে যায়, এখানে ততক্ষণে আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়।

 

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বরগুনা দুর্যোগপ্রবণ একটি এলাকা এবং প্রতি বছরই এ অঞ্চলে বন্যা বা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় জানমালের অনেক ক্ষতি হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। যদিও প্রয়োজন সত্ত্বেও আবহাওয়া অফিস না থাকায় এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ রয়েছে। তবে আমি আশাবাদী, খুব শিগগিরই এখানে একটি স্থানীয় আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হবে এবং বিষয়টি দ্রুত সরকারের নজরে আসবে।

 

ভোরের আকাশ/মি