মাদারীপুরে চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।
অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকদের কারিগরি পরামর্শ, সুষম সারের ব্যবহার, বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকায়, সার, বীজ, কীটনাশক কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে থাকায় এ বছর ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় এবং বাম্পার ফলন হওয়ায় মাদারীপুরের ৪ উপজেলার কৃষকদের মুখে ফুটে হাসির ঝলক।
ধান কাটা, মাড়াই করা ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষকরা। এ বছর উৎপাদিত চালের পরিমাণ দাড়াবে ১ লাখ ৪৮ হাজার টন জানালেন মাদারীপুর কৃষি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।
মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ৪টি উপজেলায় ইরি-বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৯৮৪ হেক্টর, হাইব্রিডের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৯০০ হেক্টর।
আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৯১৯ হেক্টর জমিতে। উফশীর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৭ হাজার ৪০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৪৮৭ হেক্টরে। স্থানীয় বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০০ হেক্টর জমিতে, আবাদ হয়েছে ১৬০ হেক্টর জমিতে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৯৮০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৯৮৪, কালকিনির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৪৫০, আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৫৮২, রাজৈরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ১০, আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ২১০, শিবচরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৭০, আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৭৯০।
এ বছর মাদারীপুরে হাইব্রিড এসএল৮এইচ, হিরা-১, হিরা-১৯, এসিআই-১, এসিআই-২, এসিআই-৬, হাইব্রিড-১২০৩, দোয়েল, টিয়া ও উফশী ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯, ব্রি ধান-৫৮, ব্রি ধান-৭৪, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান-৯২ জাতের ধানের আবাদ বেশি হয়েছে এবং ফলনও হয়েছে ভালো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধানকাটা কৃষক আসছেন ধান কাটতে মাদারীপুরে। কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই ধান কাটা, মাড়াই করা ও ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এ বছর পার হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ৪ টন চাল। এতে উৎপাদিত চালের পরিমাণ দাড়াবে ১ লাখ ৪৮ হাজার টন। বাজারে ধানের ভালো দাম ও বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি।
মাদারীপুর সদর উপজেলার খাগদী এলাকার খলিল মোড়ল জানান, তিনি এক একর জমিতে বোরোর চাষ করেছিলেন। ধান খুবই ভালো হয়েছে। একরে ৭৫ থেকে ৮০ মন ধান হবে তার। বাজারে ধানের দামও ভালো। এ রকম দাম থাকলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে ধান চাষ করবেন বলে জানান তিনি।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের অবনী ভূষণ মন্ডল জানান, এ বছর ধান খুব ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো। ধান চাষে সরকারি সহায়তা পাওয়ায় এবং বাজারে ধানের ভালো দাম থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সন্তোষ চন্দ্র চন্দ জানান, অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকদের কারিগরি পরামর্শ, সুষম সারের ব্যবহার, বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকায়, সার, বীজ, কীটনাশক কৃষকদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে থাকায় এ বছর ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় এবং বাম্পার ফলন হওয়ায় মাদারীপুরের ৪ উপজেলার কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। ধান কাটা, মাড়াই করা ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষকরা।
এ বছর পার হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ৪ টন চাল। এতে উৎপাদিত চালের পরিমাণ দাড়াবে ১ লাখ ৪৮ হাজার টন। বাজারে ধানের ভালো দাম ও বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি। কৃষকেরা ধান এখনই খোলা বাজারে বিক্রি না করে কয়েক মাস পরে বিক্রি করলে দাম আরো বেশি পাবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
ভোরের আকাশ/নি