logo
আপডেট : ২৩ মে, ২০২৩ ১২:০৭
সিংগাইরে ইটভাটার আগুনে পুড়েছে কৃষকের স্বপ্ন
বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ

সিংগাইরে ইটভাটার আগুনে পুড়েছে কৃষকের স্বপ্ন

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ইটভাটার আগুনের তাপে পুড়ে গেছে জমির পাকা ধান

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ইটভাটার আগুনের তাপে পুড়ে গেছে প্রায় ৮০ বিঘা জমির পাকা ধান। তিন বছর যাবৎ এমন ঘটনা ঘটলেও মেলেনি কোনো সমাধান বা কাক্সিক্ষত ক্ষতিপূরণ।

 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, সিংগাইর উপজেলার চান্দহ ইউনিয়নের রিফাইতপুর গ্রামটি ধান উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের আয়ের মূল চালিকাশক্তি কৃষির বিভিন্ন ফসল।

 

স্থানীয়দের বাধার মুখে ফসলি জমির ওপর গড়ে তুলেছেন সার্ক ব্রিকসসহ কয়েকটি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকলেও ইট পোড়ানো হয় ইটভাটায়। প্রথমদিকে স্থানীয় প্রশাসন ভাটাগুলোতে যেন ইট পোড়ানো না হয় সেজন্য কয়েক দফায় অভিযান চালায়। কিন্তু পরবর্তীকালে অদৃশ্য কারণে ইট পোড়ানো হলেও প্রশাসন নীরবতা পালন করছে বলে কৃষকদের দাবি।

 

রিফাইতপুর গ্রামের কৃষক আক্কাস মেম্বার বলেন, আমি এ বছর ২৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। এতে খরচ পড়েছে প্রায় ১৫-১৬ হাজার টাকা। কিছুদিনের মধ্যে ধান ঘরে তোলা যেত। এরই মধ্যে ইটভাটার আগুনের তাপে পুড়ে গেচে স্বপ্নের লালিত ফসল। কষ্টে অর্জিত ফসল ঘরে তোলার আগেই পুড়ে চিটা হয়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন তিনি। ধান ঘরে না উঠলে পরিবার পরিজনের খাদ্যের জোগান নিয়েও শঙ্কায় আছেন তিনি।

 

একই গ্রামের কৃষক শাহজাহান, আলী মুদ্দিন, মজিবর, শাহজাহান, আয়নাল ও হাসিম জানান, ফসলি জমির ওপর এই ভাটাটি গড়ে ওঠার শুরু থেকে স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবাদ করেও সুফল পাননি। অনেক বাধার পরেও অদৃশ্য কারণে এ ভাটায় ইট পোড়ানো হয়েছে। এরই মাঝে ওই ভাটার পাশে তাদের ফসলি প্রায় ৮০ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে। গত বছর তারা বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫ মণ হারে ধান পেয়েছিলেন। এ বছর উঠতি ধান চিটা হয়ে যাওয়ায়

 

পরিবারের খাদ্য নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ ইটভাটা বন্ধের জোর দাবি জানান তারা।

 

একই গ্রামের কৃষক নবু সিকদার বলেন, আমরা ভাটা মালিকের সাথে সমঝোতা করেছি, এ বিষয় কোনোকিছু করতে হবে না।

 

৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কলিমুদ্দিন সিকদার জানান, সার্ক ব্রিকসের ইট পোড়ানোর আগুনের তাপে ভাটা এলাকার পাশের প্রায় ৮০ বিঘা ইরি ধান পুড়ে গেছে বলে কৃষকরা জানালে তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং ভাটা মালিককে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেন।

 

চান্দহর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, ধান পুড়ার অভিযোগ পেয়েছি। ভাটা মালিক ফরিদ হোসেনকে খবর দেয়া হয়েছে, সুষ্ট সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়কে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছি।

 

সিংগাইর উপজেলার চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি এবং ইউপি চেয়ারম্যানকে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। তাদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না।

 

সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ জানান, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শুনেছি, তবে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি