logo
আপডেট : ৩১ মে, ২০২৩ ১০:৪০
এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের বাঁধভাঙা আনন্দ
এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার

এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের বাঁধভাঙা আনন্দ

কক্সবাজারে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক

লবণের পর এবার কক্সবাজারে কৃষিতেও বাম্পার ফলন ঘরে তুলেছে কৃষক। ফলে লবণ চাষি ধান চাষিদের ঘরে ঘরে এখন আনন্দ উৎসব। এমনটা জানালেন মহেশখালীর লবণ ও ধান চাষি আবু তালেব।

 

তিনি আরো বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লবণ চাষিরা যেমন লাভবান হয়েছে তেমনি ধান চাষিদের ঘরেও উঠেছে কাক্সিক্ষত ফসল। লবণ ও ধানের মূল্য ছিল ভাল। ফলে কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে বাঁধভাঙা আনন্দ।

 

জেলার ৮ উপজেলার মাঠ থেকে বোরো ধান সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনো হয়েছে ভালো এবং গত মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পেরে খুশি হয়েছে জেলার কৃষক।

 

কৃষকরা বলছেন, তেমন বড় কোনো ঝড়-বৃষ্টি ও দুর্যোগ না হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার একর প্রতি ২-৫০ মণ করে ফলন বেশি হয়েছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে ১৩ হাজার টন চাল অতিরিক্ত উৎপাদন করেছে কৃষকরা।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ৫৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে লক্ষ্যমাত্রার কম ৫৪ হাজার ৫৭৭ হেক্টরে চাষ হয়েছে। কারণ অনেক কৃষি জমিতে বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা তৈরি হয়েছে।

 

হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান মিলে জেলায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৯ টন। হেক্টরপ্রতি ৩ টন হিসেবে সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ লাখ ২১ হাজার ১৫১ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক উৎপাদন হয়েছে চকরিয়া উপজেলায়-৭০ হাজার ৭১৪ টন। দ্বিতীয় সর্বাধিক উৎপাদন হয়েছে পেকুয়া উপজেলায় ২৯ হাজার ৩৪৩ টন।

 

এরপর মহেশখালী উপজেলায় ২৮ হাজার ৭১৬ টন, সদর ও ঈদগাঁও উপজেলায় ২৬ হাজার ৬০৫ টন, রামু উপজেলায় ২৬ হাজার ২৯১ টন, উখিয়া উপজেলায় ২৫ হাজার ২৯০ টন, টেকনাফ উপজেলায় ৭ হাজার ৭৮৪ টন এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় ৬ হাজার ৪০৮ টন।

 

কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী অফিসার আশীষ কুমার দে বলেন, এ বছর বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৯ টন। সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ লাখ ২১ হাজার ১৫১ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ২০ হাজার টন চাল অন্য জেলায় সরবরাহ করা যাবে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. কবির হোসেন জানিয়েছেন, সরকারি প্রণোদনার আওতায় জেলার কৃষকদের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এবার বোরো মৌসুমে হাইব্রিড ধানে ও উপশী জাতের ধানে প্রায় ৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ধান চাষে সকল কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

এছাড়াও কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভোর্তুকিমূল্যে কম্বাইন্ড হারভেস্টার বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা দ্রুত সময়ে ফসল রোপণ ও কর্তন করতে পারছেন এবং খরচের দিক থেকেও তারা লাভবান হচ্ছেন।

 

তিনি বলেন, যত বেশি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বৃদ্ধি হবে ততো বেশি কৃষক লাভবান হবেন। তাই কৃষি যান্ত্রিকীকরণ অব্যাহত রেখেছে সরকার। এবার পার হেক্টর জমিতে প্রায় ৩ টন করে বোরো ধানের ফলন হয়েছে।

 

চকরিয়া বদরখালী কৃষি উপনিবেশিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, লবণ, পান ও ধানসহ নানা শষ্য উৎপাদনে সমৃদ্ধ কক্সবাজার জেলার ২৭ লাখ মানুষ উৎপাদিত ফসল ও নায্য মূল্যের সুফল ভোগ করছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি