logo
আপডেট : ৩১ মে, ২০২৩ ১৩:৪৩
তীব্র গরমে গাইবান্ধায় সারা পড়েছে তালশাঁসের
রিফাতুন্নবী রিফাত,গাইবান্ধা

তীব্র গরমে গাইবান্ধায় সারা পড়েছে তালশাঁসের

ছবিটি গাইবান্ধা শহরের শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে তোলা

বেশ কয়েকদিন যাবৎ থেকেই উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ট জনজীবন। তাই এই তীব্র গরমে কদর বেড়েছে মৌসুমী রসালো ফল তালের শাঁসের। রোদের তাপমাত্রা যত বাড়ছে ততই চাহিদা বাড়ছে এই ফলের। এ তীব্র গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহুর্তের জন্য হলেও তৃষ্ণায় স্বস্তি এনে দিচ্ছে কচি তালের শাঁস।

 

গাইবান্ধা জেলা শহরের বেশ কয়েকটি স্থানেই এই তালশাঁস বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তালের চোখকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। এ জেলার কেউ তালের চোখ, তালশাস আবার কেউ কেউ বলে তালকুর। সাধারণত বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে জৈষ্ঠ্যর শেষ পর্যন্ত এই তালের শাঁস পাওয়া যায় । বিক্রেতারা বিভিন্ন এলাকা এসব কেনার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকেও তালের শাঁস আমদানি করছেন।

 

এ ফলটি খেতে যেমন সুস্বাধু তেমনি এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। এ জন্যই সকলের কাছে গরমে তালের শাঁস বেশ প্রিয়। গরমে তালের শাঁস খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলবে। সেই সঙ্গে বাড়বে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শুধু গ্রীষ্মকালেই বাজারে কচি তাল দেখতে পাওয়া যায়। এর নরম কচি চোখ খেতে ছোট বড় সবাই পছন্দ করে।

 

তালের চোখকে নারিকেলের মতই পুষ্টিকর বলে বিবেচনা করা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণ পানিও থাকে। যা অনেকটা ডাবের পানির মতো। এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ উপাদান থাকে। পুষ্টিবিদদের মতে, ডাবের পানি এবং তালশাসের গুণাগুণ একই রকমের। দুইটিই খোলসের ভিতরে থাকে। ডাবের পানির পুরোটাই তরল, অন্যদিকে তালের চোখে কিছুটা শক্ত অংশ থাকে।

 

সরেজমিনে (৩১ মে বুধবার) গাইবান্ধা জেলা শহরের শিল্পকলা একাডেমির সামনে, পুরাতন ব্রিজ,নতুন বাজার, পূর্বপাড়া, হকার্স মার্কেট, আসাদুজ্জামান স্কুলের সামনে সহ বিভিন্ন মোড়ে ভ্যানগাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ চাহিদা।

 

পূর্বপাড়া এলাকায় তালশাঁস বিক্রেতা আব্দুর রহিম মিয়া (৪৪) বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটা পানি তাল বা তালের শাঁস। হিসেবেই বিক্রি হয়। প্রতিটি কাঁচা তাল ১০ থেকে ২০ টাকা ও তালের শাঁস প্রতিটি ৫ টাকা পিস বিক্রি হয়।

 

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি তালের ভেতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে। পাইকারি নামে কিনে এভাবে তালের শাঁস বিক্রি করেই সংসার চালাই।

 

সদর হাসপাতাল রোডে তালের শাঁস বিক্রেতা সাজু মিয়া (৩৬) বলেন, ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে এই ব্যবসা করি আমি। দৈনিক ৮-৯ শত টাকা থেকে হাজার টাকাও ব্যবসা হয় তার। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তালশাঁস বেচাবিক্রি দিন দিন বাড়ছে বলে জানান তিনি।

 

শহরের ডেভিড কোংপাড়ার শেখ হাবিবুর রহমান নামে এক ক্রেতা ভোরের আকাশকে বলেন, বাজারের অন্য সব ফলে ফরমালিন বা কেমিকেল থাকলেও তালের শাঁসে কোনো ফরমালিন বা কেমিকেল মেশানো থাকে না। এতে শরীরের ক্লান্তিও দূর হয়। তাই এই গরমে তালের শাঁস মেয়েকে খাওয়াচ্ছেন বলে জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি