ঐতিহ্যবাহী গোয়ালন্দ গরুর হাট ইজারায় অনিয়মের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে হাট ইজারা প্রদানে অভিযাগ পাওয়া গেছে। কমমূল্যে বিধিবর্হিভূত ভাবে হাট ইজারা দেয়ায় সর্বোচ্চ দরদাতা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।
অভিযাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ১৪৩০ সনের জন্য গোয়ালন্দ গরুর হাট ইজারার জন্য দরপত্র আহব্বান করে গোয়ালন্দ পৌরসভা। দরপত্রে গরুর হাটের সরকারি কাক্সিক্ষত মূল্য দেয়া হয় ২৭ লাখ ৪ হাজার টাকা। গরুর হাট ইজারার জন্য মোট তিনটি দরপত্র জমা পড়ে।
তিনটি দরপত্রের মধ্যে মন্ডল ট্রেডার্স সর্বোচ্চ দরদাতা ডাকমূল্য ২৯ লাখ টাকা, মন্ডল এন্টারপ্রাইজ ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৫ এবং সর্বনিম্ন দরদাতা জাকির হোসেন ২৬ লাখ এক হাজার টাকা হিসেবে দরপত্র জমা দেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মন্ডল ট্রেডার্স ডাক মূল্য ২৯ লাখ এবং আয়কর ও ভ্যাট ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা সর্বমোট ৩৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে মেয়রের অনুকূলে জমাও করেন। কিন্তু পৌরসভা সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট ইজারা না দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা জাকির হোসেনকে গরুর হাট ইজারা প্রদান করেন। জাকির হোসেন কাক্সিক্ষত সরকারি মূল্যের চেয়ে ১ লাখ ৩ হাজার টাকা কোম দরপত্র জমা দেন। কাক্সিক্ষত মূল্য না পেলে পুনরায় দরপত্র আহব্বান করার বিধিও এক্ষেত্রে আমলে নেয়া হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা মন্ডল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাসিম মাহমুদ ইভান জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযাগ করেন। গত ১৫ মে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আতিকুল ইসলাম রাজবাড়ী জলা প্রশাসক একটি পত্র দেন। পত্রটিতে উল্লেখ করা হয় শর্তাবলি লঙ্ঘন করে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা প্রদান করা হয়নি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অবহিত করার জন্য বলা হলো।
বিষয়টি জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। বর্তমানে তদন্ত চলছে। এর বেশিকিছু এখন বলা যাবে না।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা এবং তার পরের জন নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা ও দরপত্র জমা দেয় নাই। এজন্য আমরা পরে পরিষদে সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জাকির হোসেনকে ইজারা দিয়েছি।
সরকারি কাক্সিক্ষত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কেন দিলেন, আর পুনরায় কেন দরপত্র আহব্বান করলেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, চারদিকে হাট আর স্থান কমে যাওয়ার কারণে আমাদের গরুর হাট ছোট হয়ে আসছে। আমরা এই হাটটি টিকিয়ে রাখার জন্য পরিষদের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইজারা দিয়েছি।
ভোরের আকাশ/নি