রংপুরের গঙ্গাচড়া মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। এতে করে রংপুর মহিপুর শেখ হাসিনা অভিমুখী সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন ও পথচারীরা।
স্থানীয়দের দাবি, এক দিনের বৃষ্টি ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ধসে গেছে সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক। এর ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকে সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি সেতুটি সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর বুড়িমারী স্থলবন্দর-কাকিনা-পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা-তুষভান্ডার থেকে প্রতিদিন পাথর বোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে।
এসব ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে রংপুর-মহিপুর শেখ হাসিনা অভিমুখী সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটলসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সড়কটির বিভিন্ন অংশ ধসে যায়। এ নিয়ে ২৫ মে রংপুর-গঙ্গাচড়া সড়ক দ্রুত সংস্কারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ডিও লেটার পাঠান রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এর ফলে গত ২৫ মে রোববার রাত থেকে আবারো ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ । এ নিয়ে গত ২৯ মে এবং গত ১ জুন পাটগ্রাম ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতি ট্রাক চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে।
ফলে কালীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম শর্তসাপেক্ষে রাত ১০টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত দশ চাকার ড্রাম গাড়ি ছাড়া সকল যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয় ট্রাক মালিক সমিতিকে। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে তারা নির্বিঘ্নে চালাচ্ছে দশ চাকার ড্রাম গাড়ি ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে কথা হয় মহিপুর সেতু এলাকার ব্যবসায়ী বুলু মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রশাসন বড় বড় পাথরের গাড়িগুলা চলাচল বন্ধ করলো ভালো কথা। আবারো কেন খুলি দেইল। এই গাড়ি গুলা খুলি দিয়া যে আবার দুর্ঘটনা ঘটেচোল। কালকের রাইতে পাথর ভর্তি একটা ট্রাক সেতুর মোকাত এমনভাবে ফাঁসি গেইছে ভাগ্যভালো উল্টি যায় নাই।
কয়েক দিন আগেও দুইটা ট্রাক উল্টে যায় এতে করে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এখন তো হামার গুলারে ভয় লাগে সড়কের বগলত বাড়ি কখন যে গাড়ি উল্টি বাড়িত ঢুকে। এই ভয়ে এখন রাইতের বেলা নিন্দে ধরে না।
শুধু তমজিদেই নয় এ বিষয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন মাসে ছোট-বড় প্রায় ১২ থেকে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা বলছেন, সড়কটি এবং সেতুর মোকা যদি দ্রুত সংস্কার করা না হয় তাহলে হয়তো প্রতিদিন এই ধরনের দুর্ঘটনা আরো বাড়তে থাকবে।
লক্ষীটারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, কয়েকদিন আগে শুনলাম এই সড়কে নাকি ভারি যান চলাচল বন্ধ করেছে কিন্তু সন্ধ্যা হলে নির্বিঘ্নে দশ চাকার ড্রাম গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল করে এর ফলেই সড়কে ফাটলসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ধসে গেছে শেখ হাসিনা সেতুর উত্তর পাশের সংযোগ সড়ক।
ভারী যানবাহন চলাচলের বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মোটর মালিক সমিতির লোকজনকে দশ চাকার ড্রাম গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিইনি। যদি তারা দশ চাকার ড্রাম গাড়ি চালায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব ।
সড়কটির সংস্কার বিষয়ে রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কটি সংস্কারের বিষয় আমাদের রংপুর এলজিইডির পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে।
ভোরের আকাশ/নি