logo
আপডেট : ৭ জুন, ২০২৩ ১৪:৪৩
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জনজীবন, হাতপাখার বাজার গরম
বগুড়া প্রতিনিধি

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জনজীবন, হাতপাখার বাজার গরম

বগুড়ায় হাতপাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে

সারা দেশের মতো বগুড়ায়ও তীব্র গরম আর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচন্ড তাপমাত্রা বৃদ্ধি আর অতিরিক্ত লোডশেডিং মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। দিনে-রাতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মানুষ হাফিয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজিতে সারা দেশের মতো বগুড়াসহ অন্যান্য উপজেলাবাসী কাহিল হয়ে পড়ছে।

 

প্রচন্ড গরম আর অতিরিক্ত তাপমাত্রায় সাধারণ মানুষ একটু শান্তির পরশ নিতে খুঁজছেন প্রকৃতির ছায়া। তাতেও শান্তি নেই। অবিরাম গা থেকে ঝরছে ঘাম। এমনি গরমে শরীরে কখনো ঘাম শুকাচ্ছে আবার কখনো ঝড়ছে।

 

একদিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং অন্যদিকে প্রচন্ড গরম। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মানুষ এখন ভরসা করছেন তালপাতার পাখার ওপর। গরমের হাত থেকে বাঁচতে পাখা কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বগুড়াবাসী। এমন গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হাতপাখারও চাহিদা। মধ্যবিত্তের কাছে এটাই যেন এখন স্বর্গসুখ।

 

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু শহর বা উপজেলা সদরেই নয়, বিভিন্ন ইউনিয়নে তালপাখা এবং কাপড়ের তৈরি পাখার দোকানগুলোতে এখন উপচেপড়া ভিড়। বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের রং-বেরঙের হাতপাখা। এমন অবস্থায় এখন সর্বত্র কদর বেড়েছে হাতপাখার। চাহিদা বাড়ায় পাখার দামও বেড়েছে। বছরের এ সময়ে পাখার চাহিদা থাকে। চৈত্র থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত পাখা বিক্রির উপযুক্ত সময়। কিন্তু এবার অতিরিক্ত লোডশেডিং আর ভ্যাপসা গরম হওয়ায় চাহিদা আরো বাড়ছে তালপাখার।

 

বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা ও চুরিপট্টি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাতপাখা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শুধু শহরেই নয়, বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে তালপাখা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

কাঁঠালতলা এলাকার পাখা বিক্রেতা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্রচ গরম আর লোডশেডিংয়ে হাতপাখা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় লাভ কম হচ্ছে। পাখা তৈরি করতে রং, সুতা, বাঁশ, কঞ্চি গুনার প্রয়োজন হয়। এসবের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাত পাখা তৈরিতে লাভ কম হচ্ছে। এখানে তালপাখা, কাপড়ের তৈরি পাখা ও সুতার তৈরি পাখাও পাওয়া যায়।

 

দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত তালপাতার পাখা রয়েছে। সব দামের পাখাই আমি বিক্রি করি।

 

তিনি জানান, তালপাতার পাখার প্রচলন বহু আগে থেকেই। তবে আধুনিক যুগে এসে হাতপাখার প্রচলন কিছুটা কমেছে। তবুও প্রচলন রয়েই গেছে। তবে বগুড়াতে গত কয়েক দিনে হঠাৎ বিদ্যুতের লোডশেডিং ও তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষ এখন হাতপাখা বেশি ব্যবহার করছেন।

 

দোকানে পাখা কিনতে আসা আব্দুর রশিদ বলেন, প্রচন্ড গরম আর রাতে-দিনে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার খেলায় আমরা কুপোকাত। তাই গরমের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির জন্য তিনটি তালপাখা কিনলাম। বিদ্যুৎ চলে গেলে কিছুটা হলেও গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

 

বগুড়ার নেসকো-১ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোন্নাফ বলেন, আমাদের চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ না পাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হয়। চাহিদার ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্রাহক পাচ্ছেন। এলাকাভিত্তিক বিদ্যুতের রেশনিং চলছে।

 

এলাকাভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। আগামীতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরো বাড়তে পারে।

 

ভোরের আকাশ/নি