গরমের চেয়ে অনেক অনেক বেশি উত্তাপ অনুভূত হয়। এ রকম তাপদাহ পরিস্থিতির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। ভ্যাপসা গরমের কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন আবহাওয়াবিদরা। তার মধ্যে অন্যতম হলো বাতাসের আর্দ্রতা এবং বৃষ্টি না হওয়া। বর্ষা আসার আগেই কালবৈশাখীর কারণে গত বছর আবহাওয়া এতটা চরম অবস্থায় ছিল না। এবার তা হয়নি। বৃষ্টি হয়নি। এ কারণেই এতটা গরম পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছর ৪ জুন দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটেছিল। জ্যৈষ্ঠ মাসেই চলে এসেছিল বর্ষা। সে হিসেবে এবার সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে ১০ জুন। একেবার আষাঢ় মাসেই বর্ষার আগমন ঘটবে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তারা বলছে, ঋতুর পালাবদলের এই সময়টা খুব নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তো আছেই। সব মিলিয়ে বর্ষা এবার যেমন কিছুটা দেরিতে আসছে, তেমনি বৃষ্টি কম হওয়ারও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ বছর বাতাসের আর্দ্রতা এত বেশি যে, মানুষের শরীরে ঘাম বেশি হচ্ছে। সহজে শুকাচ্ছে না। এজন্য অস্বস্তিকর এক গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জুনের প্রথম সপ্তাহেই আসার কথা ছিল মৌসুমি বায়ু।
কিন্তু এখন তারা জানাচ্ছে, দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের উপকূলে আসবে এটি। এদিকে সারা দেশে এই বায়ুর বিস্তার লাভ করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। সেই হিসাবে তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ সারা দেশে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তার আগে ১০ জুন থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হবে। এতে করে কমে আসবে দেশের তাপমাত্রা।
তবে আবহাওয়া অফিস থেকে এটাও জানানো হয়েছে, পুরো বর্ষা শুরু না হওয়া পর্যন্ত এই গরম পুরোপুরি কমবে না। কারণ যে পরিমাণ তাপপ্রবাহ হচ্ছে, তাতে মাটির উষ্ণতা অনেক বেড়ে গেছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসেও বলা হয়, জুন মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারা দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষাকাল) বিস্তার লাভ করতে পারে। এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও সৈয়দপুর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, সিলেট বিভাগসমূহ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ভোরের আকাশ/নি