logo
আপডেট : ১১ জুন, ২০২৩ ১৭:৩৫
ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা মহোৎসব শুরু ২০ জুন
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা মহোৎসব শুরু ২০ জুন

সনাতন সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা মহোৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২০ জুন। শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৮দিন ব্যাপী শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎবের আয়োজন করা হয়েছে।

 

এবার রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। রথযাত্রা উৎসবের মূল আকর্ষণ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রা ছাড়াও ৮দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে-আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলী কীর্তন, জগন্নাথ লীলামৃত ও ধর্মীয় নাটক।

 

রোববার সকালে রাজধানীর স্বামীবাগ আশ্রমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রথযাত্রা মহোৎসব উদযাপনে অনুষ্ঠানমালার বিস্তারিত তুলে ধরে ঢাকার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)। মতবিনিময় সভায় অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সাধরাণ সম্পাদক গৌরাঙ্গা দাস ব্রহ্মচারী ও ইয়ুথ প্রচারক জয় মহাপ্রভু দাস ব্রহ্মচারী।

 

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, রযথযাত্রার মহোৎসবে সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরের মত পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। শোভাযাত্রায় পুলিশসহ আইন-শৃংখল রক্ষা বাহিনীর নিরাপত্তা থাকবে।

 

ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। এছাড়া শোভাযাত্রাসহ উৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তায় নিজস্ব পাচশতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন। তিনি রথযাত্রা উৎসব এবং শোভাযাত্রায় স্বতঃস্ফ’র্তভাবে অংশ গ্রহণের জন্য সনাতন সম্প্রদায়সহ ভক্তবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি রথ টানা বা শোভাযাত্রায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

 

ইসকনের স্বামীবাগ আশ্রম ২০ জুন মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর দেড় টায় আলোচনাসভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে। শুভ রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনর শ্রী প্রণয় ভার্মা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

 

শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর শ্রীবিগ্রহ সহযোগের রথের শোভাযাত্রা স্বামীবাগ আশ্রম থেকে শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির- ইত্তেফাক মোড়- শাপলা চত্তর-দৈনিক বাংলা মোড়-রাজউক ভবন-গুলিস্তান- পুলিশ হেডকোয়ার্টার-সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল-হাইকোর্ট মাজার- দোয়েল চত্তর- শহীদ মিনার-জগন্নাথ হল ও পলাশী হয়ে শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে।

 

২৭ জুন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে। উল্টো রথযাত্রায় প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা

 

প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। এর নয় দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হয় উল্টো রথযাত্রা। তবে এবার বিশেষ কারণে উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে এক দিন আগে।

 

রথযাত্রা বিভিন্ন নামে পরিচিত। পুরী জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার প্রচলন হয়। বাংলাদেশেও রথযাত্রা হিন্দুদের একটি পবিত্র উৎসব। ঢাকার ধামরাইয়ে এটি পরিচিত যশোমাধবের রথযাত্রা নামে। গাজীপুরের জয়দেবপুরে মাণিক্যমাধবের রথযাত্রা। ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে যশোমাধবের রথযাত্রা ও মহেশের জগন্নাথদেবের রথযাত্রাও উপমহাদেশ বিখ্যাত। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রথযাত্রার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

 

ধামরাইয়ের উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত হবে যশোমাধবের রথযাত্রা। এছাড়া পুরনো ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথটান অনুষ্ঠিত হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি