logo
আপডেট : ১৩ জুন, ২০২৩ ১৭:০৪
চলনবিল অঞ্চলে ব্যাহত আউশ আবাদ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

চলনবিল অঞ্চলে ব্যাহত আউশ আবাদ

তাড়াশে পানির অভাবে আউশ আবাদ করতে পারছেন না কৃষক, জমি ফেটে চৌচির

চলনবিল অঞ্চলে বোরো ধান কাটার পরপরই অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে কৃষক স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন জাতের বর্ষাকালীন রোপা ও বোনা আউশের আবাদ শুরু করেছিলেন। কিন্তু শুরুতেই তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে পানির অভাবে তা ব্যাহত হচ্ছে।

 

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, জুলাই মাস পর্যন্ত উঁচু জমিতে বোনা এবং রোপা আউশের আবাদ করা যায়।

 

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া এবং নওগাঁর আত্রাই এলাকায় চলতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন আউশ ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; যা গত বছর ছিল ৩৮ হাজার হেক্টরের মতো।

 

বোরো ধান কাটা শেষ হলে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় উঁচু জমিতে কম খরচে কৃষকরা ব্রি৪৮, ব্রি৯৮, স্থানীয় জাত জিরা, আব্দুল গুটিসহ বিভিন্ন জাতের বর্ষাকালীন বোনা ও রোপা আউশ ধানের আবাদ করে থাকেন। ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। বাজারে এসব চিকন বা সরু ধানের চাহিদা ও দাম বেশি।

 

কৃষকরা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে এ ধানের জন্য জমি চাষ, বীজতলা তৈরি, বীজ বপন ও রোপণ করে থাকেন। কিন্তু তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির ফলে পানির অভাবে আবাদ বিঘিœত হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমিগুলো ফেটে চৌচির।

 

কৃষি বিভাগ বলছে, রোপা আউশ ধানের আবাদ মৌসুমে গত বছর তাপমাত্রা এ বছরের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। সেই সঙ্গে মে-জুন মাসে বৃষ্টির পরিমাণও এবারের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেশি ছিল। অথচ চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও কাক্সিক্ষত বৃষ্টি হয়নি। তাই বেশিরভাগ কৃষক এ ধানের আবাদ করতে পারছেন না।

 

তাড়াশের লাউতা গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, সেচের তেমন প্রয়োজন না হওয়ায় এবং সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দিয়ে এ আবাদ করা যায় বলে খরচ অনেক কম হয়। এ জন্য কৃষক বর্ষাকালীন রোপা আউশ আবাদে মনোযোগ দেন।

 

বোরো আবাদের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম খরচ করে রোপা আউশের আবাদ করা সম্ভব। বিঘাপ্রতি সেচ দিতে তিন মাসে বিদ্যুৎ খরচ হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। ডিজেলে খরচ হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। বৃষ্টি হলে এ খরচ সাশ্রয় হয়। সার এবং কীটনাশকও কম প্রয়োজন হয়। এমনটিই জানান দোগাড়িয়া গ্রামের আল আমিন।

 

কিন্তু এখনো বৃষ্টির অভাবে অনেক কৃষক বীজতলা তৈরি, জমি চাষ, বীজ বপন ও রোপণের মতো কাজ করতে পারছেন না। সেচের পানির অভাবে বর্ষাকালীন আউশ আবাদ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কৃষক পরবর্তী আবাদের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে বলে জানান বামিহাল এলাকার কৃষক আজমল হোসেন।

 

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিলের বোরো ধান কাটার পর বর্ষাকালীন আউশ ধানের আবাদ কৃষক শুরু করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি-বাদল না হওয়ায় এ আবাদে ছন্দপতন ঘটেছে। তবে অনেকেই সেচ দিয়ে আবাদ-পূর্ববর্তী কাজগুলো করছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি