logo
আপডেট : ১৭ জুন, ২০২৩ ১০:৪৫
কানসাটের বাজারে ঠাকুরগাঁয়ের খিরসাপাত আম, ক্ষুব্ধ চাষিরা
মো. নাদিম হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

কানসাটের বাজারে ঠাকুরগাঁয়ের খিরসাপাত আম, ক্ষুব্ধ চাষিরা

ঠাকুরগাঁও জেলার কানসাট বাজারে খিরসাপাত আম বিক্রির জন্য ভ্যান নিয়ে অপেক্ষায় ব্যবসায়ী

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে জমে উঠেছে আমের বাজার। এখানে প্রতিদিন সাড়ে চারশ থেকে পাঁচশ ট্রাক বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হয়ে থাকে। এ এলাকার আমের দেশব্যাপী সুনাম থাকায় বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাপারিরা এখান থেকে আম সংগ্রহ করেন। আবার স্থানীয় ব্যাবসায়ীরাও বিভিন্ন মোকামে আম পাঠিয়ে থাকেন।

 

তবে নতুন করে ঠাকুরগাঁও জেলার আম কানসাট বাজারে বিক্রি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এখানকার আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাজারে মিশে বিক্রি হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলার আম। আর এসব আম কিনে প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তারা। এর ফলে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সুনাম নষ্ট হতে পারে।

 

শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আভিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও থেকে আম এনে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কানসাট আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুই ভ্যান ঠাকুরগাঁওয়ের আম এনে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। আভিরুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে ঠাকুগাঁওয়ে ১৪০০ টাকা মণ দরে আম কিনেছেন।

 

সে আম বেশি দামে বিক্রির আশায় কানসাট বাজারে নিয়ে এসেছেন। এর আগেও তিনি বাইরের জেলার আম কানসাটে বিক্রি করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, বাইরের জেলার চাইতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম অনেক সুমিষ্ট ও দামও বেশি।

 

আভিরুল ইসলামের মতো ঠাকুরগাঁও থেকে আম এনে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন একই উপজেলার নানধড়া এলাকার জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন বাজারে ঠাকুরগাঁওয়ের আমের চাহিদা তেমন নেই। ফলে বাধ্য হয়ে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন। তবে কেউ কেউ চিনে নিচ্ছে তাদের আমগুলো বাইরের জেলার। আবার যারা চিনতে পারছেন না তারা ভুল করেই কানসাটের আম ভেবে সমমূল্যে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

কানসাট আমের হাটের উদ্যোক্তা রায়হান আলী বলেন, কানসাটের আমের চাহিদা থাকায় জেলার বাইরের আম এখানে এনে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতারা ঠকছেন। ফলে সুনাম নষ্ট হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের।

 

শ্যামপুর এলাকার আম চাষি জিন্নুর রহমান বলেন, আমাদের খিরসাপাত আম মধুর চেয়েও মিষ্টি। অন্যজেলার আম এত সুমিষ্ট হবে না। বেশি মুনাফার লোভে বাইরের জেলার আম কানসাটে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই আম কিনে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক।

 

মোবারকপুর এলাকার অনলাইন আম ব্যবসায়ী নেয়ামতুল্লাহ বলেন, কানসাট বাজার থেকে ২৮০০ টাকা মণ দরে তিন মণ আম কিনে ভোক্তার কাছে পাঠান। সে আম এতটাই টক ছিল, ভোক্তা খেতে পারেননি। এমনকি দুই দিনের মধ্যে সব আম পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে বুঝেছেন তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ভেবে ঠাকুরগাঁওয়ের আম কিনেছিলেন।

 

কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক উমর ফারুক টিপু বলেন, বাইরের জেলার আম বিক্রি করলে অবশ্যই বলে দেয়া উচিত। সেটি মানা হচ্ছে না। যারা বাইরের জেলার আম স্থানীয় বলে বিক্রি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি