logo
আপডেট : ১৮ জুন, ২০২৩ ১৮:৪৪
কারা অধিদপ্তরের সেই বজলুর রশীদের সাজা হাইকোর্টে বহাল
নিজস্ব প্রতিবেদক

কারা অধিদপ্তরের সেই বজলুর রশীদের সাজা হাইকোর্টে বহাল

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে কারা অধিদপ্তরের সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক(ডিআইজি) বজলুর রশীদকে নিম্ন আদালতের দেয়া ৫ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

 

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দিয়েছেন। বজলুর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

 

অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার সম্পদ অর্জনের দায়ে বজলুর রশীদকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে গতবছর ২৩ অক্টোবর রায় দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। রায়ে সাজার পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একইসঙ্গে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রীয় অুনুকলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে গতবছর ২ নভেম্বর বজলুর রশীদ আপিল করেন। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতকাল তা খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

 

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) মামলা করার পর ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর বজলুর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে হাইকোর্ট গত ৫ এপ্রিল তাকে জামিন দিলেও পরদিন ৬ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতদ ওই জামিন স্থগিত করে দেন। ফলে বজলুর রশীদ আর কারাগার থেকে মুক্তি পাননি।

 

তার বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডের ৫৫/১ (পুরাতন) ৫৬/৫৭ (নতুন) নির্মাণাধীন রূপায়ন হাউজিং স্টেটের স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের ২৯৮১ বর্গফুট আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন বজলুর রশীদ। অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য বাবদ তিন কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধও করেছেন। তবে এবিষয়ে তার আয়কর নথিতে কোনো তথ্য নেই। এর দাম হিসেবে পরিশোধ করা তিন কোটি ৮ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দুদককে দেখাতে পারেননি। এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য চুক্তি করেন। এরপর ওই বছরের ৭ জুন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে চেকে পরিশোধ করেন। আর বাকি তিন কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নগদে পরিশোধ করেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এর ভিত্তিতে ওইবছরের ২২ অক্টোবর বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিশেষ জজ আদালত। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ, উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় দেয় বিশেষ জজ আদালত।

 

বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে ডিআইজি প্রিজন্স (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ অভিনবপন্থা বেছে নেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারের কাছে কয়েক কোটি টাকা পাঠান। এজন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়। সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়। এই রিপোর্ট দেখার পর তদন্তে নামে দুদক। এই তদন্তকালে তার অ্যাপার্টমেন্টের তথ্য পায় দুদক।

 

ভোরের আকাশ/আসা