logo
আপডেট : ২১ জুন, ২০২৩ ১০:২৩
জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বরিশালে বইছে নির্বাচনী হাওয়া
এসএলটি তুহিন, বরিশাল

বরিশালে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

সদ্য অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই বরিশালজুড়ে বইছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া।

 

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার ক্ষমতাসীন দলে মনোনয়ন পরিবর্তন করে নতুন মুখের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়াকে সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ ভোটার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 

কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন, বর্তমান সংসদ সদস্যদের অনেকের বিরুদ্ধে উন্নয়ন কাজে কমিশন বাণিজ্যসহ তৃণমূলে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সে হিসেবে ভোটের মাঠে জনপ্রিয়তায় তাদের অবস্থান একেবারে শূন্যের কোঠায়। তাই নতুন মুখের প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে সিটি নির্বাচনের ন্যায় অনেকটা বিজয়ের পথ সুগম হবে।

 

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারিকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দলের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। দলের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের ৬টি আসনের মধ্যে সার্বিক দিক বিবেচনা করে ২/১ টিতে বর্তমান সংসদ সদস্যদের পুনরায় মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। বাকি অন্যসব আসনে নতুন মুখের জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল জেলার ৬টি আসনের রাজনীতিতেই আগাম নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নড়েচড়ে বসছেন বরিশালের রাজনীতিকরা। কেউ কেউ প্রচারণা এবং গণসংযোগে প্রকাশ্যে মাঠেও নেমেছেন। আবার নতুন মুখের প্রার্থীরা বর্তমান সংসদ সদস্যদের রোষাণলে দীর্ঘদিন কোণঠাসা হয়ে থাকা দলের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে মাঠ গোছাচ্ছেন।

 

তবে, নির্বাচনী ডামাডোলে এগিয়ে রয়েছেন সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কেউ কেউ কৌশলে সরকারের নানামুখী উন্নয়নের ফিরিস্তি ভোটারদের সামনে উপস্থাপনের মাধ্যমে মাঠ গোছাচ্ছেন। বরিশাল সিটি নির্বাচনে নতুন মুখের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার পর পরই মূলত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার নতুন মুখের প্রার্থীদের আগমন ঘটার গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

 

বরিশালের সন্তান হওয়া সত্তেও দীর্ঘদিন নিজ এলাকায় কোণঠাসা হয়ে থাকা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ, বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমানকে নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।

 

এর মধ্যে সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে টানা এক মাস পর্যন্ত নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে সফলতা অর্জন করায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশালের যেকোনো নির্বাচনী এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও বলরাম পোদ্দারকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মনে করছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার আর এই দুই নেতাকে নিরাশ করবেন না।

 

তাদের বরিশালের যেকোনো নির্বাচনী আসন থেকে এবার মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবি উঠেছে সর্বত্র। যদিও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি উল্লিখিত এ দুই নেতা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন থেকে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে বর্তমান সরকারের নানামুখী উন্নয়ন ফিরিস্তি তুলে ধরে গণসংযোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দলের বৃহৎ অংশের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মাঠ গুছিয়ে রেখেছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক।

 

পাশাপাশি সিটি নির্বাচনের পর একই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে গণসংযোগ শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান। পুরো নির্বাচনী এলাকাজুড়ে তার (মিজান) পক্ষে সাটানো হয়েছে সু-বিশাল ব্যানার ও ফেস্টুন। যাতে আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হওয়ার আশা প্রকাশ করে সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

 

অভ্যন্তরীণ বিরোধে জর্জরিত বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যক্রম দেখা না গেলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা রয়েছেন দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বরিশাল-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহান বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না। তারপরেও আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের কী সিদ্ধান্ত আসে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

 

তিনি আরো বলেন, কঠোর আন্দোলন কিংবা নির্বাচন। দলের যে সিদ্ধান্তই আসুক না কেন, আমি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে রয়েছি।

 

ভোরের আকাশ/নি