নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) কর্তৃপক্ষ।
তাদের দাবি, প্রায় ৩ কোটি টাকার বিল অপরিশোধিত থাকায় সোমবার দুপুর ১টায় পৌর ভবনের সামনের খুটি থেকে বিদ্যুতের তার কেটে দেয়া হয়। এসময় গাড়িসহ নেসকো কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেন পৌর কাউন্সিলর ও কর্মচারীরা। এতে প্রায় ২ ঘণ্টা রাস্তায় অবরুদ্ধ হয়ে গাড়িতেই অবস্থান করেন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণে আসা আভিযানিক দল।
নেসকোর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক সাখাওয়াত হোসেন তালুকদার দাবি করেন, সৈয়দপুর পৌরসভার ২ কোটি ৯১ লাখ টাকার বিল দীর্ঘদিন থেকে বকেয়া রয়েছে। বার বার নোটিশ দেয়া সত্তেও বকেয়া পরিশোধে কোনো উদ্যোগে নেই। নেসকো স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলীসহ রংপুর জোনাল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা একাধিকবার ধর্না দিলেও পৌর পরিষদ কর্ণপাত করছেন না।
তিনি বলেন, আমরা বকেয়া আদায়ে মাঠে নেমেছি। নেসকো সৈয়দপুর সরবরাহ ও বিপণন কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইতোপূর্বে পৌর কমিউনিটি সেন্টারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসব নানা কারণে আজ বাধ্য হয়ে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে অনুরোধ জানানোয় এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া পরিশোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্যানেল মেয়রের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শুধু পৌরভবনের সংযোগ দেয়া হয়েছে।
পৌর প্যানেল মেয়র-১ শাহিন হোসেন বলেন, মূলত তাদের দেয়া বিল নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। তাই আমরা একটি কমিটি করেছি যারা এ বিষয়ে খতিয়ে দেখার পরই বকেয়া পরিশোধ করা হবে। এজন্য সময় দিতে হবে। নয়তো নাগরিকসেবা দিতে প্রতিবন্ধকতার ফলে জনভোগান্তি হবে। সেজন্য কর্তনকৃত সংযোগ পুনরায় প্রদানের অনুরোধ করায় ইউএনওর মধ্যস্থতায় নেসকো তা রেখেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান বলেন, নেসকো তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। তবে পৌরসভা যেহেতু জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাই গুরুত্ব বিবেচনায় পৌর কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পুনঃসংযোগ দিতে বলায় তারা মেনে নিয়েছে। একইভাবে পৌর পরিষদকেও বকেয়া পরিশোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছি। নতুবা নেসকো তাদের আইনানুগ পদক্ষেপ নিবে।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আব্দুস সেলিম বলেন, আগের পরিষদের সময়ই প্রায় ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বিদ্যুতের বিল বকেয়া দেখায় নেসকো। যার অধিকাংশই ভ‚তুড়ে বিল। এনিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় উভয়পক্ষ বসে সমন্বয়ের কথা হলেও বিদ্যুৎ বিভাগ আগে বকেয়া পরিশোধের দাবি জানায়। এ কারণে নিষ্পত্তি হয়নি। তারপরও বর্তমান পরিষদ ৫০ লাখ টাকা ইতোমধ্যে বকেয়া বিল দিয়েছে এবং চলতি মাসসহ নিয়মিত বিল প্রদান করছে।
পৌর মেয়রসহ কাউন্সিলররা বলেন, কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়েই তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এসেছিল। যা আমরা প্রতিহত করেছি। আগে এত টাকা বিল বাকি থাকলেও কখনো লাইন কাটা হয়নি। অথচ এখন নিয়মিত মাসিক বিল দিলেও পূর্বের পরিষদের রেখে যাওয়া বকেয়ার জন্য এমন পদক্ষেপ ষড়যন্ত্রমূলক। আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই একটি মহলের উস্কানিতে এহেন কর্মকান্ড ঘটানো হচ্ছে। তারা এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানান।
ভোরের আকাশ/নি