logo
আপডেট : ২৫ জুন, ২০২৩ ১১:৩৮
বগুড়া-১ আসন
নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় সরব রাজনৈতিক দলগুলো
এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া

নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় সরব রাজনৈতিক দলগুলো

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া: সময় ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। আর এ সময়ের আগেই মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বেড়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের। তৃণমূলে চায়ের স্টলে বাড়ছে সরব আলোচনা, উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক মাঠ। নির্বাচনী বৈতরণী পেরিয়ে জয়ের জন্য মরিয়া আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে আন্দোলনের ডাকের অপেক্ষা বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আশায় দিন গুনছে বিএনপি।

 

এরই মাঝে আগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বগুড়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় সরব হয়েছে।

 

নির্বাচনের দেরি থাকলেও বগুড়া শহর ও সব নির্বাচনী এলাকায় এবং বিভিন্ন দেয়ালে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসনভিত্তিক শুভেচ্ছা জানানো শুরু হয়ে গেছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে কিনা, তা নিয়েও জেলার রাজনৈতিক পাড়ায় চলছে নানা বিশ্লেষণ। এ বিশ্লেষণের মধ্যেই জেলার ৭টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায়। বগুড়ার রাজনৈতিকপাড়াখ্যাত শহরের টেম্পল রোড ও নবাববাড়ী সড়কে এখন আগামী সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন আলোচনা চলছে।

 

কেউ বলছেন, বিএনপি ভোটে আসবে আবার কেউ বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে কোনো লাভ করতে পারবে না। সে কারণে বিএনপি এখনই জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে না। লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া নির্বাচনের মাঠে নামবে না বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা, দলীয় সিদ্ধান্ত যেমনই হোক। বিএনপির মধ্যেও অনেক নেতা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে নিজেদের মাঠ গোছাতে ব্যস্ত আছেন। শুধু দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে স্থানীয় বিএনপি।

 

জেলায় দল গুছিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অপেক্ষা করছে বিএনপি। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়া থেকে এবার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা আছে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। এসবের মধ্যে বগুড়ায় হারানো নিজেদের দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি। সেই দুর্গে হানা দিয়ে আবারো নৌকা মার্কার বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। জাপা-জাসদ তাদের আসন ধরে রাখতেও তৎপরতা চালাচ্ছে।

 

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বগুড়ার ৭টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দুটি, বিএনপি দুটি, জাতীয় পার্টি দুটি ও একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে বগুড়ার ৭টি আসনের দুটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে জাসদ ও বাকি ৪ আসনে জাপার প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫টিতে বিএনপি ও দুটি আসনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছিল।

 

আগামী নির্বাচনে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত সাহাদারা মান্নান। গুঞ্জন উঠেছে আগামী নির্বাচনে তিনিই আবারো প্রার্থী হবেন।

 

এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে পারেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকাস্থ বগুড়া সমিতির সভাপতি ও শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর মুখোশ ছবি প্রকল্পের সদস্য সচিব কেএম মোস্তাফিজার রহমান শ্যামল, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত সুরুজের পুত্র মুজাহিদুল ইসলাম বিপ্লব এবং পুলিশের এডিআইজি হামিদুল আলম মিলনের স্ত্রী শাহাজাদী আলম লিপি।

 

বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে পারেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া জেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির, জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী।

 

মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান শিল্পী বলেন, আমার স্বামী প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের অসমাপ্ত কাজ করার জন্য আমি নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি আবারো জয়লাভ করতে পারবো। আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ. রাজ্জাক বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে সারিয়াকান্দি-সোনাতলা এলাকায় সামাজিক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছি। আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তিনি সেটাই মাথা পেতে নেবেন বলে জানান।

 

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পুলিশের এডিআইজি হামিদুল আলম মিলনের সহধর্মিণী শাহজাদী আলম লিপি বলেন, আমি এ এলাকার সন্তান হিসেবে সাধারণ জনগণের অনেক উপকার করেছি। এখন পর্যন্ত সারিয়াকান্দি-সোনাতলার মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।

 

সামর্থ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, মাঠে কাজ করেন যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে। অন্যদিকে বিএনপির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো নির্দেশ আসলে, তখনই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক সাংসদ আলহাজ কাজী রফিকুল ইসলাম।

 

ভোরের আকাশ/নি