logo
আপডেট : ২৬ জুন, ২০২৩ ১১:৪৬
কোরবানির ঈদ ঘিরে টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারশালা
অজয় ঘোষ, রাজশাহী

কোরবানির ঈদ ঘিরে টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারশালা

রাজশাহীতে কামারশালায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজশাহীতে মাংস কাটার সরঞ্জাম বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। দা, বঁটি, হাঁসুয়া, চাপাতি, ছুরিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরি করছেন কামাররা। টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারশালাগুলো। কিছু সরঞ্জাম নতুন বানাচ্ছেন আবার পুরোনোগুলো শান দিচ্ছেন তারা। যেন কোরবানির আমেজে মেতে উঠেছে কামারশালাগুলো।

 

বছরের অন্য দিনগুলোয় তেমন কাজ হাতে থাকে না কামারশালায়। ওইসময়গুলোয় অলস সময় পার করলেও কোরবানির ঈদে যেন ব্যস্ততা চারগুণ বেড়ে যায়। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলে কর্মব্যস্ততা। বেড়ে যায় তৈরি করা জিনিসগুলোর দাম। বছরের এ সময়ে তাদের লাভও বেড়ে যায় অনেকাংশে। ফলে সময় নষ্ট করতে নারাজ কামাররা। এ ব্যস্তমুখর সময় চলে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত।

 

তবে কয়লা, লোহাসহ পারিশ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ার ফলে আগের মতো লাভ নেই বলে জানান কামাররা। তবে পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতেও যেন বদ্ধপরিকর তারা। যার ফলে কোরবানির ঈদে ব্যস্ততার মাঝে ডুবে থাকেন তারা।

 

একসময় সকালে ঘুম থেকে উঠলেই কামারপড়ায় শোনা যেত কামারশালার টুং-টাং শব্দ। বর্তমানে অনেকাংশে কম শোনা যায়। বর্তমানে আধুনিকায়ন হবার ফলে রেডিমেড জিনিসপত্রের কদর বেড়েছে। ফলে তৈরি করা জিনিপত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় কামাররা। কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, বর্তমান সময়ে সারা বছর ব্যবসায় মন্দা চলে।

 

তবে এ উপজেলার কৃষিপণ্য যেমন ধান, গম, পাট, কালাই ইত্যাদি হারভেস্ট করার জন্য কাস্তে ব্যবহার করা হয়। যে কারণে সেসব মৌসুমে কিছুটা ব্যবসা চললেও তা দিয়ে তেমন লাভ হয় না। আমরা এ কোরবানির সময়ের অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু এ সময়টাও রেডিমেড জিনিসপত্র বাজারে আসার ফলে আগের মতো মুনাফা হয় না। এ কারণে অনেকেই পেশা বদলে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে।

 

বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিটি দা তৈরিতে প্রকারভেদে মজুরি নেয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। চাকু তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। বড় ছুড়ি তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। বটি তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা।

 

স্থানীয় ক্রেতারা বলেন, আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে এবং মাংস কাটতে দা, বঁটি, চাকু ও ছুরির প্রয়োজন। এজন্য বাজারে দা, বঁটি ও ছুরি কিনতে এসেছি। তবে গত বছরে এসব জিনিসের দাম খানিকটা বেশি।

 

লোহার তৈরি জিনিপত্র পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, সারা বছরই তারা দা, বঁটি, চাকু, ছুরি বিক্রি করি। তবে কোরবানির মৌসুমেই এসব সরঞ্জামের কেনাবেচার ধুম পড়ে। এবারো ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামারদের কাছ থেকে বেশি দামে এসব জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। ফলে কিছুটা বেশি দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/নি