কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙনে খুলনার পাইকগাছার হিতামপুর মালোপাড়ার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কপোতাক্ষ নদের তীব্র স্রোতে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে মালোপাড়া এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন। ভাঙন এলাকার কিছু কিছু ঘরের নিচের অর্ধেক মাটি নদে ধসে পড়েছে। ঘরগুলি নদের ওপর ঝুলছে।
যেকোনো সময় নদীগর্ভে ভেঙে পড়তে পারে। এসব পরিবারের মানুষগুলো আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অতিসত্বর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাস্তাসহ বাকি পরিবারের ঘরবাড়ি এবং ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
মালোপাড়া গিয়ে দেখা যায়, একটি মন্দির ও প্রায় ২৫টি পরিবার ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ভাঙনের তীব্রতা না থাকলেও গত বছর থেকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙন কবলিত মালোপাড়ার রঞ্জিত বিশ্বাস, নিমাই বিশ্বাস, প্রভাষ বিশ্বাস, রবিন বিশ্বাস, সুভাষ বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, বাসুদেব বিশ্বাস, লালু বিশ্বাস, নলিনা বিশ্বাস, ভাদু বিশ্বাস, বিরেন্দ্র বিশ্বাস, সুরঞ্জন বিশ্বাস, সুশান্ত বিশ্বাসের পরিবার চরম আতঙ্কে রয়েছে। জোয়ারের পানি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করছে। আর ভাটার টানে নদের তীর ভেঙে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মালোপাড়ার দূর্গামন্দির কমিটির সভাপতি লালু বিশ্বাস বলেন, বিগত কয়েক বছর নদের টুকিটাকি ভাঙন ছিল। তবে গত বছর থেকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। অতি সত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আমাদের মন্দির, ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
পাইকগাছায় ভদ্রা তীরবর্তী দেলুটির কালিনগর ও দারুনমল্লিক এবং কপোতাক্ষ তীরবর্তী রাড়ুলী মালোপাড়া, স্টিমার ঘাট, আগড়ঘাটা, সোনাতনকাটি, কপিলমুনি, কাশিমনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন চলমান রয়েছে। ভাঙন ও ফাটল শুরু হওয়ায় বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি সর্বস্ব হারানোর শঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে এলাকাবাসীর। যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
বেড়িবাঁধ ভাঙলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। মালোপাড়ার ভাঙনকবলিত এলাকায় গত বছর কিছু অংশে বালির বস্তা দেয়া হয়েছে। ভাঙনে বালির বস্তাগুলি নদে ধসে পড়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাইকগাছার সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রাজু হাওলাদার বলেন, হিতামপুর মালোপাড়ার কপোতাক্ষ নদের ভাঙন এলাকার ডিজাইন ও পরিকল্পনা প্রস্তুত করে নতুন অর্থবছরে চাহিদাপত্র পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বরাদ্দ হলে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা হবে।
ভোরের আকাশ/নি