logo
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০২৩ ১০:৫০
বারি-৪ জাতের আম চাষে সফল হলেও এবার ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তাগাছার বকুল
মীরবাবুল, ময়মনসিংহ

বারি-৪ জাতের আম চাষে সফল হলেও এবার ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তাগাছার বকুল

এ বছর এই গাছগুলোতে আশানুরূপ আম ধরেনি তাই ক্ষতিগ্রস্ত

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বাণিজ্যিকভাবে বারি-৪ জাতের আম চাষে সফলতা দেখিয়েছেন বকুল হোসেন। প্রতিবছর আম বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। তবে এবার গাছে আশানুরূপ আম ধরেনি। অনেক গাছ মরতে শুরু করেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের বিন্নাকুড়ী গ্রামে দেড় একর জমিতে লাগানো ২৯০টি গাছের কোনোটাতে ১০টি আবার কোনোটাতে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫টি আম ঝুলে আছে। আবার কোনোটাতে একটি আমও ধরেনি। গাছের সতেজতাও কমে গেছে। অনেক গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।

 

এই বাগানের পাশেই বকুল হোসেনের দেখাদেখি তার চাচা জালাল উদ্দিন ৩ একর জমিতে বারি-৮ জাতের আম চাষ করেছেন। প্রতিবছর তিনিও আম বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন। তবে এবার আম কম হওয়ায় চিন্তিত জালাল উদ্দিন। বিরূপ আবহাওয়াসহ স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ কিংবা সহযোগিতা না পেয়ে ক্ষুব্ধ তারা।

 

স্থানীয়রা জানান, অর্গানিক পদ্ধতিতে আম চাষে বকুল হোসেনের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জালাল উদ্দিনসহ স্থানীয় অনেক কৃষক আমবাগান গড়ে তুলেছেন। বকুল টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ী কলেজের ইংরেজি প্রভাষক। সামাজিক ও মানবিক বিভিন্ন কাজ করে তিনি মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত। গাছের আমগুলো পাকলে প্রথমে অসহায়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করেন তিনি। বাকি আম বিক্রি করেন তিনি। তবে এবার অজানা কারণে গাছে তেমন আম ধরেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি।

 

আমচাষি বকুল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকতার পাশাপাশি শখ থেকে বাড়ির পাশে বিভিন্ন জাতের আমের গাছ লাগাতাম। পরে ২০১৩ সালে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বারি-৪ জাতের আমবাগান গড়ে তুলি। প্রতিবছর গাছে প্রচুর ফলন হতো। ধীরে ধীরে আম বিক্রি করে লাভের পরিমাণ বাড়লেও এ বছর গাছে ধরেনি আশানুরূপ আম।

 

তিনি বলেন, আগে প্রত্যেক গাছেই এক থেকে দুই শতাধিক আম ঝুলে থাকত। এ বছর সর্বোচ্চ ২০-২৫টির বেশি আম ধরেনি। অনেক গাছে একটি আমও ধরেনি। কাঁচা আমে দাগ পড়ে গেছে। তীব্র রোদ, বিরূপ আবহাওয়াসহ কৃষি অফিসের পরামর্শ ও কোনো ধরনের সহযোগিতা না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এরই মধ্যে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে কিছু গাছ শুকিয়ে মরতে শুরু করেছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ জেলার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, জেলায় ২ হাজার ৬৮৩ হেক্টর জমিতে ২৯ হাজার ৫১৩ টন আম উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তাগাছা উপজেলায় ১৬২ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ৭৮২ টন উৎপাদন হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমচাষিদের সব ধরনের পরামর্শসহ সহযোগিতা করা হয়। গাছের বয়স বেশি হওয়া কিংবা সঠিক পরিচর্যার অভাবে ফলন কম হয়ে থাকে। এ ছাড়াও বিরূপ আবহাওয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যেতে পারে। বকুল হোসেনের আমবাগানে কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে ফলন কম হওয়ায়সহ গাছ মরে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে।

 

আগামী বছর যেন ফলন বাড়ে সে জন্য প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সহযোগিতা করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি