ভোলার লালমোহনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লালমোহন হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ দিনে প্রায় ৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।
অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় এর মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগীদের জন্য আলাদা বেড খোলা হয়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে রোগীর চাপ বাড়ায় বেড সংকটে অনেককে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ফ্লোরে। কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সগণ আন্তরিকতার সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, শরীরে ১০১ থেকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় জ্বর ও শরীর ব্যথাই ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রধান লক্ষণ। এ ছাড়া ডেঙ্গু রোগীদের পেট ফুলে যাওয়া, রক্তবমি, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ এবং শরীর ঠান্ডা অনুভব করাসহ আরো বেশকিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করার আহব্বান চিকিৎসকদের।
উপজেলার গজারিয়ার মাতাব্বর বাড়ির মো. মোহসীন বলেন, প্রথমে আমার কোমরে ব্যথা হয় এরপর আস্তে আস্তে পুরো শরীরে ব্যথা শুরু হয়, সাথে প্রচন্ড জ্বর এবং বমিও হয়। স্থানীয় ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ সেবন করার পর ভালো না হলে লালমোহন হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানোর পর ডেঙ্গু পরীক্ষা দিলে ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে বলে পরীক্ষায় রিপোর্ট আসে। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি।
লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা রাস্তার মাথার মনোয়ারা নামের এক বৃদ্ধা বলেন, গায়ে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসলে ডাক্তার ডেঙ্গু টেস্ট করাতে বললে টেস্টে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হই। কালমা ইউনিয়নের চরছকিনা এলাকার বাতান বাড়ির নিশাত জ্বর, পাতলা পায়খানা ও বুক পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসলে টেস্টে ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
লালমোহন হাসপাতালে কর্তব্যরত নাসিং সুপারভাইজর দিপালী রানী দে বলেন, ইমার্জেন্সি থেকে ডেঙ্গু রোগী বেডে পাঠানোর পর আমরা পরম যতেœ তাদের সেবা দিয়ে থাকি। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীদের বেড সংকুলান হচ্ছে না। তাই রোগীদের অনেককে হাসপাতালের ফ্লোরে জায়গা দিতে হচ্ছে।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অতনু মজুমদার বলেন, জুলাই মাসের প্রথম থেকে লালমোহনে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। তবে আমরা সাধ্য অনুযায়ী রোগীদের আন্তরিকতার সঙ্গে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। এ ছাড়া রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত যেসব ওষুধ রয়েছে তা হাসপাতাল থেকে প্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গুরোগ না হওয়ার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছোট ছোট প্লাস্টিকের পাত্রসহ অন্যান্য পাত্রে যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবাইকে শোবার সময় মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে।
ভোরের আকাশ/নি