logo
আপডেট : ১৯ জুলাই, ২০২৩ ১৫:৪৪
উন্নত জাতের হাঁস পালনে যুবকের সফলতা
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

উন্নত জাতের হাঁস পালনে যুবকের সফলতা

খামারে হাঁসের খাবার দিচ্ছেন উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম

উচ্চশিক্ষা শেষে চাকরির পেছনে ঘুরেও তা পাননি যুবক সাইফুল ইসলাম। একসময় জেঁকে বসে হতাশা। পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার চিন্তা থেকে এক বন্ধুর পরামর্শে লেগে পড়েন হাঁস পালনে। প্রথমে ৫০টি উন্নত জাতের বেইজিং সাদা হাঁস দিয়ে শুরু হয় তার পথচলা। দুই বছর ঘুরে সাইফুল ইসলামের হাঁসের খামার বড় হতে থাকে।

 

সাইফুল শুধু হাঁস পালন নয়, উন্নত জাতের বেইজিং সাদা হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সেই বাচ্চা দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রান্তিক খামারিদের কাছে সরবরাহ করছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন উচ্চশিক্ষা অর্জনের লক্ষ্য শুধু চাকরি নয়। সাইফুল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের হায়াতখারচালা গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন।

 

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মা-বাবা কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করেছেন। ইচ্ছে পড়াশোনা শেষে ভালো চাকরি করে মা-বাবার কষ্ট দূর করা। ছুটতে থাকি চাকরির পেছনে। কোথাও হলো না চাকরি। যেন চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছিলাম। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে ৫০টি উন্নত জাতের বেইজিং হাঁস কিনে বাড়ির পাশের জমিতে পালন করি। সেই ৫০টি হাঁস থেকে এখন খামারে পরিণত হয়েছে।’

 

সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, আজ শুধু হাঁসের খামারে সীমাবদ্ধ নয়, আধুনিক পদ্ধতিতে হাঁসের ডিম থেকে ফোটানো হচ্ছে বাচ্চা। সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রান্তিক খামারিদের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। উন্নত জাতের এক মাস বয়সের একটি হাঁসের ওজন হয় এক কেজি। সাড়ে তিন মাসে এর ওজন গিয়ে দাঁড়ায় চার কেজিতে।

 

‘এই জাতের হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। মৃত্যুহার খুবই কম। মাংস খুবই সুস্বাদু, সহজে বাজারজাত করা যায়। খুবই লাভজনক, একটি হাঁস একনাগাড়ে দুই বছর ডিম দেয়। আধুনিক পদ্ধতিতে ২৮ দিনে বাচ্চা ফোটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রান্তিক খামারিদের কাছে সরবরাহ করে অধিক পরিমাণ লাভবান হতে পারছি।’ যুক্ত করেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।

 

গোসিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান শাহীন বলেন, হাঁসের খামার করে তার সফলতা বর্তমান সমাজের জন্য অনুসরণীয়। সিদ্ধান্ত অটল থাকলে মন দিয়ে পরিশ্রম করলে সফলতার চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব তা প্রমাণ করেছেন সাইফুল ইসলাম।

 

শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আতিকুর রহমান বলেন, নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলা হাঁসের খামারের জন্য সরকারিভাবে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস।

 

ভোরের আকাশ/মি