সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ লাইনে চলছে একই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার বাড়ির বৈদ্যুতিক সব কার্যক্রম। ১৪ মাসের বকেয়া বিলের দায়ে পল্লিবিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন একই বিদ্যালয়ের রওশন আরা বেগম নামের এক সহকারী শিক্ষিকা।
গত মে মাস থেকে প্রকাশ্যে বিদ্যালয়ের মিটারের বিদ্যুৎ লাইন থেকে লাইন টেনে নিয়ে নিজ বাড়িতে ব্যবহার করলেও নির্বিকার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ পরিচালনা কমিটির সভাপতিও।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পরমালী সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রওশন আরা বেগম।
এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৫ জন শিক্ষক থাকলেও রওশন আরা বেগম ছাড়া বাকি শিক্ষকরা বাস করেন জেলা শহরে। একই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হওয়ায় ও বাড়ির পাশে বিদ্যালয় থাকায় স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে রওশন আরা বেগম অবৈধভাবে বিদ্যালয় থেকে তার দিয়ে লাইন টেনে বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অথচ বিদ্যুৎ বিল বহন করতে হচ্ছে বিদ্যালয়কে।
পরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ লাইন এক সহকারী শিক্ষক বাড়িতে নিয়ে ব্যবহার করছেন। আমি বহুবার লাইন কাটতে বলেছি কিন্তু তারা শুনছেন না।
একই বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষিকা ছফুরা পারভিন জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রওশন আরা বেগম গত মে মাস থেকে আমাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ে সংযোগ দেয়া বিদ্যুতের লাইন ব্যবহার করছে। আমরা নিষেধ করলেও ক্ষমতা বলে সরকারি বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাকিব জানান, আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেও আমাকে এবং প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা তার নিজ বাড়িতে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন।
বিষয়টি জানান পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বললে তারা বাড়িতে অসুস্থ মেয়ের অজুহাত দিয়ে লাইন চালাচ্ছে। সহকারী শিক্ষিকা রওশন আরা বেগমের স্বামী বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি এবং জমিদাতা। এ কারণে তারা প্রভাব খাটিয়ে কাউকে না জানিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। আমরা নিষেধ করলেও তা মানেননি।
বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী অভিযুক্ত শিক্ষিকা রওশন আরা বেগমের সাথে মোবাইলে কথা হলে জানান, বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যালয়ের লাইন ব্যবহার করছি। পল্লিবিদ্যুৎ অফিসে মিটারের জন্য আবেদন করেছি। মিটার পেলে লাইন খুলে দেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বাড়িতে ব্যবহার করে এক সহকারী শিক্ষিকা বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/নি