রাজধানীবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ওয়াসার এটিএম বুথের মাধ্যমে। এতদিন ড্রিংকওয়েল বুথে প্রতি লিটার পানি দাম রাখা হতো ভ্যাটসহ ৪০ পয়সা। কিন্তু আজ ১ আগস্ট থেকে প্রতি লিটার পানির দাম দ্বিগুণ করা হয়েছে। ওয়াসা জানিয়েছে আজ থেকে পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ পয়সা প্রতি লিটার। এর সঙ্গে ভ্যাট যোগ করে প্রতি লিটার পানির দাম পড়ছে ৮০ পয়সা। যা আগের দামের চেয়ে দ্বিগুণ।
ড্রিংকওয়েল পানির দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। তারা জানান দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ এমনিতে কষ্টে আছে। তার ওপর হঠাৎ করেই পানি দাম দ্বিগুণ করায় কষ্ট আরো বাড়বে। তারা বলছে আগে ১ টাকা রিচার্জ করলে ২৫০ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যেত। একটি ছোট খাটো পরিবার এ পানিতেই মাস চলতো। এখনো আড়াই লিটার পানি পেতে একজন গ্রাহককে ২০০ টাকা গুনতে হবে।
তারা জানান ২৫০ লিটার পানি বিশুদ্ধ করতে যে পরিমাণ গ্যাস পোড়াতে হতো তার চেয়ে কম দামেই ড্রিংকওয়েল থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যেত। ফলে ড্রিংকওয়েল থেকে পানি সংগ্রহের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে। এছাড়া পানি বিশুদ্ধ ও সুস্বাদু হওয়ায় পানির চাহিদা রাজধানীবাসীর কাছে ক্রমেই বাড়ছে। এ অবস্থায় ওয়াসার দাম বৃদ্ধির কারণে বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হবে অনেকেই।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে ওয়াসার বিশুদ্ধ খাবার পানির এটিএম বুথে গ্রাহকসংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎপাদনও বাড়াচ্ছে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির বিষয় সামনে এনে বিশুদ্ধ পানির লিটারপ্রতি দাম ৪০ পয়সা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। এতদিন এক লিটার বিশুদ্ধ পানি ৪০ পয়সায় পাওয়া গেলেও আজ থেকে ৮০ পয়সা করে দিতে হবে গ্রাহককে। দাম বাড়ানোর বিষয়টি চালু থাকা ২৯৭টি বুথে লিফলেট দিয়ে এবং বুথের কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে ওয়াসা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে ওয়াসার বিশুদ্ধ খাবার পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব চলতি বছরের শুরুতেই দেয়া হয়েছিল। তবে প্রস্তাবটি পাস হয় এপ্রিল মাসে।
এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেছেন, ‘বুথের বিশুদ্ধ পানির দাম প্রতি লিটার ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭০ পয়সা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সঙ্গে ভ্যাট যোগ হবে ১০ পয়সা। এ সিদ্ধান্ত ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বিষয়টি আমাদের বুথগুলোতে লিফলেটের মাধ্যমে গ্রাহকদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
দাম বাড়ানোর কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যে দামে এত দিন পানি দিচ্ছিলাম সেখানে উৎপাদন খরচই উঠত না। এখন দাম বাড়িয়েও সেটি উঠবে না। এর পরও বিদ্যুৎ বিল, কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ড্রিংকিংওয়াটারের মেশিন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনেক খরচ হচ্ছে।
নগরবাসীকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ২৯৭টি এটিএম বুথ স্থাপন করেছে। ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মতো একটি কার্ড বুথের মেশিনের নির্দিষ্ট স্থানে রাখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসে বিশুদ্ধ খাবার পানি। কার্ডে টাকা শেষ হলে বুথ থেকেই ফের রিচার্জ করা যায়। শুরুতে বুথ থেকে ৫০ টাকা দিয়ে কার্ড করতে হয়।
এই কার্ডে ১০ টাকা থেকে ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যায়। বুথ থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পানি সংগ্রহ করা যায়।
ভোরের আকাশ/নি