রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে আবারো চালু হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা ট্রেন চলাচল। তিন মাসের বদলে আট মাস বন্ধ থাকার পর এ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করেছে। তবে ট্রেন চলবে পুরোনো মিটারগেজ রেললাইনেই।
১২ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে দিনে ১৬টি ট্রেন চলাচল করত। যাতায়াত করত অন্তত ৩০ হাজার যাত্রী। নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন ম্যনেজার মো. কামরুল ইসলাম জানান, আট মাস বন্ধ থাকার পর ট্রেন চলাচলের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায় গতকাল ১ আগস্ট সকাল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এখন থেকে পূর্বের মতোই ভোর ৬টা ৫মিনিট থেকে ট্রেন চলবে। প্রাথমিক অবস্থায় আপ-ডাউন আটটি ট্রিপ চলবে।
সূত্র মতে, এ পথের নতুন ডুয়েলগেজ লাইন প্রকল্পের সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও কাজের অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। সম্প্রতি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথের নতুন ডুয়েলগেজ লাইনের নির্মিত অংশ পরীক্ষা করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া অংশে তিনটি রেললাইন নির্মাণ দ্রুত শেষ করতে এবং নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লাইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়।
বলা হয়েছিল, তিন মাস পরেই আবার ট্রেন চলবে। নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা ডুয়েলগেজ লাইন প্রকল্পের পরিচালক সেলিম রউফ জানান, আগে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা পথে যে পুরোনো সিঙ্গেল লাইন ছিল, সেটিই আবার চালু করা হবে। নতুন ডুয়েলগেজ লাইন প্রকল্প শেষ হবে ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। সেটি চালু হলে পুরোনো লাইন নতুন করে সংস্কার করা হবে।
প্রকল্প সূত্র বলছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের কাজ নেয়া হয়। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি। সর্বশেষ সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এই লাইনের সিগন্যালিংয়ের কাজ শুরু হয়নি। শ্যামপুর, পাগলা, ফতুল্লা, চাষাঢ়া ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশন উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যে চলছে। তিনি আরো জানান, নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন সম্প্রসারণ ও পাগলা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রেলপথের কাজ জমির অভাবে বন্ধ ছিল।
এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে এখনো জমি বুঝে পাওয়া যায়নি। এ বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে জমি পেলে সামনের বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
অন্যদিকে প্রকল্প সূত্র বলছে, চাষাঢ়া থেকে নারায়ণগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের অংশের রাস্তায় অনেক যানবাহন চলে। তাই এই অংশে রেলক্রসিংয়ে আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণ করতে হবে। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এ বিষয়ে সমন্বয়ে সময় লাগায় কাজ শুরুতেও সময় লেগেছে।
২৫ জুলাই পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়ে ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রেলপথ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন প্রকল্পে বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঠিকাদার নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। প্রকল্প সংশোধন করে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নতুন করে দরপত্র করে দ্রুত কাজ শুরু হবে।
ভোরের আকাশ/নি