logo
আপডেট : ৫ আগস্ট, ২০২৩ ১০:১৩
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
দিনাজপুর প্রতিনিধি

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

দিনাজপুরের হিলি বন্দরে পেঁয়াজের ট্রাক

এক দিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি বন্দরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় পণ্যটির দাম বেড়েছে।

 

বন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৩২-৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও ২৭-২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

 

এ ছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৪-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা আগে ৩১-৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। একইভাবে স্থানীয় হিলির কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এক দিন আগে ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে এখন ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মাহবুব আলম বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দামই বাড়তি যার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। একদিন আগে যে পেঁয়াজ ২৮ টাকা কেজি কিনেছি সেই পেঁয়াজ আজ ৩২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এভাবে যদি সব পণ্যের দাম বাড়ে তাহলে আমাদের মতো মানুষ চলবে কীভাবে?’

 

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ‘আমরা হিলি বন্দর থেকে কিছুটা নিম্ন মানের ব্যালেন্স পেঁয়াজ কিনে বাজারে বিক্রি করি। কিন্তু হঠাৎ করে বন্দরে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। ভারতে নাকি বন্যা হয়েছে যার কারণে দাম বাড়তি বলছেন আমদানিকারকরা। বন্দর থেকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনে স্থানীয় বাজারে কিছুটা বাড়তি দামেই বিক্রি করছি।’

 

বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব আলী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল ছিল। ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ২৭-২৮ টাকা আর নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩১-৩২ টাকার মধ্যেই ছিল। এতে আমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে চাহিদামতো সরবরাহ করতাম। কিন্তু গতকাল থেকে বন্দরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। কিন্তু দেশের মোকামে এখনো পেঁয়াজের দাম না বাড়ায় আমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে বিপাকের মধ্যে পড়ে গেছি।’

 

বন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বন্দর দিয়ে আগে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করতেন আমদানিকারকরা। কিন্তু চাহিদা না থাকায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাদের। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের মান খারাপ হওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা।

 

এখন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি খানিকটা কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। সেই সঙ্গে ভারতের বন্যার কারণে সেখানেই দাম কিছুটা বাড়তি। এ ছাড়া গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ও শনিবার আশুরার কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ভারতের মোকামে লোডিং বন্ধ ছিল। যার কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে।’

 

বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকলেও আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। আগে বন্দর দিয়ে ৪০-৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ২০-৩০ ট্রাকে নেমেছে। মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে ৩৪টি ট্রাকে এক হাজার ৪১ টন পেঁয়াজ আমদানি হলেও বুধবার ২০ ট্রাকে ৫৮৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

 

চলতি সপ্তাহের গত রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ১৫৩টি ট্রাকে চার হাজার ৬৪৪ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচা পণ্য গরম ও বৃষ্টিতে পচে নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণে কাস্টমসের সব কার্যক্রম শেষে আমদানিকারকরা যেন দ্রুত খালাস করে নিতে পারেন, সে জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।’

 

ভোরের আকাশ/নি