ডেঙ্গুতে আরেক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। শরিফা বিনতে আজিজ (আঁখি) (২৭) নামের ওই চিকিৎসক শুক্রবার ভোর ৫ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শুধু শরিফা নন; তিনিসহ সবশেষ ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরো ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে দেশে ৩৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ঢাকায় ২৮৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৮৪ জন। মৃতদের মধ্যে ২১৩ জন নারী এবং ১৬০ জন পুরুষ।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ঢাকার দোহার থেকে আসা শরিফা বিনতে আজিজকে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, শরিফা বিনতে আজিজ দোহার উপজেলার লটাখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজের একমাত্র মেয়ে। এক ভাই-বোনের মধ্যে শরিফা ছিল বড়। ডা. শরিফা বিনতে আজিজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরই মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন।
এর আগে সোমবার (৭ আগস্ট) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আলমিনা দেওয়ান মিশু নামে এক তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট থাকাকালে মারা যান তিনি।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানান, একদিনে মৃত ৯ জনের মধ্যে ৬ জন ঢাকায়, ৩ জন ঢাকার বাইরে।
কন্ট্রোল রুম জানায়, ১০ আগস্ট সকাল ৮ টা থেকে ১১ আগস্ট সকাল ৮ টা পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ২ হাজার ৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকায় ৮৫৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ১৯৩ জন।
চলতি বছরের এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮০ হাজার ৭৬৪ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৪০ হাজার ৭৬৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৯ হাজার ৩১০ জন। শুধু জুলাই মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন। আগস্টের এই ১১ দিনে ভর্তি হয়েছে ২৮ হাজার ২৪২ জন।
বর্তমানে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৯ হাজার ৬৭৫ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৪২১ এবং ঢাকার বাইরে ৫ হাজার ২৫৪ জন।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ৭০ হাজার ২৬ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৩৬ হাজার ৫৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ হাজার ৯৭২ জন।
শুধু জুলাই মাসে মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। আগস্টের এই ১১ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। জুন মাসে মৃত্যু হয় ৩৪ জনের। তার আগে ৪ মাসে মারা যায় ১৩ জন। শুধু মার্চ মাসে ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ভোরের আকাশ/আসা