logo
আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:৩৩
চট্টগ্রামে বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত ১ লাখ ১৫ হাজার কৃষক, ক্ষতি ১৮৪ কোটি টাকা
মো. ইব্রাহিম শেখ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বন্যা
ক্ষতিগ্রস্ত ১ লাখ ১৫ হাজার কৃষক, ক্ষতি ১৮৪ কোটি টাকা

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগর ও বিভিন্ন উপজেলায় ৫ হাজার ৬৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হওয়া শরৎকালীন সবজিসহ ২৬ হাজার ৯৬৪ হেক্টর জমির ফসল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চট্টগ্রামের প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৪০ জন কৃষক। পাশাপাশি আউশ ধান, রোপা আমন ধান, আমনের বীজতলা ও শরৎকালীন সবজি মিলে চট্টগ্রামের কৃষকদের প্রায় ১৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং ও পতেঙ্গায় ২১৪ হেক্টর জমিতে লাগানো হয় আউশ ধান, রোপা আমন ধান ও শরৎকালীন সবজি। এরমধ্যে ১১৩ হেক্টর জমির ফসলের পুরোটাই ক্ষতি হয়েছে। ফলে নগরের ৫৯০ জন কৃষকের প্রায় ৫ কোটি ৯০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। অপরদিকে বন্যার কবলে পড়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া, সাতকানিয়াসহ ১৮টি উপজেলায় ৭ হাজার ৯০৯ হেক্টর জমির ফসলের পুরোটাই ক্ষতি হয়েছে। ফলে এসব উপজেলার প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৫০ জন কৃষকের প্রায় ১৭৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে।

 

আউশ ধানে ক্ষতি ১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা
বন্যার প্রভাবে চট্টগ্রামের ১৮টি উপজেলার ১১ হাজার ৬০৩ জন কৃষকের আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চলতি মাসের শেষে এসব ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু বন্যার পানিতে এসব ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকদের প্রায় ১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এতে বন্যাকবলিত হয়ে মিরসরাই উপজেলার ৬৫ জন কৃষকের প্রায় ৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা, সীতাকুণ্ডে ২৭০ জন কৃষকের প্রায় ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, ফটিকছড়িতে ৬৫ জন কৃষকের ৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা, হাটহাজারীতে ৬০ জন কৃষকের প্রায় ৯ লাখ টাকা, রাঙ্গুনিয়ায় ৩৫ জন কৃষকের ৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, বোয়ালখালীর ১০৫ জন কৃষকের ২২ লাখ টাকা, পটিয়ার ৮৫০ জন কৃষকের ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা, কর্ণফুলীর ১৫০ জন কৃষকের ১৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, আনোয়ারার ৯৫০ জন কৃষকের ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা, চন্দনাইশের ৬ হাজার ৭২০ জন কৃষকের ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, লোহাগাড়ার ৫৮০ জন কৃষকের ১ কোটি ২১ লাখ টাকা, সাতকানিয়ার ১ হাজার ২১৪ জন কৃষকের ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বাঁশখালীর ৪শ’ কৃষকের ৫৪ লাখ টাকা ও সন্দ্বীপের ৪৪ কৃষকের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার আউশ ধান ক্ষতি হয়েছে।
৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি রোপা আমনে

 

গতমাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলায় লাগানো হয়েছিল আমনের চারা। আগামী দুই থেকে তিন মাস পর এসব ফসল কাটার কথা। তবে বন্যার কারণে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া, বোয়ালখালী ও পটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ১৫ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে লাগানো আমনের চারা পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এসব এলাকার ২৯ হাজার ২৪৭ জন কৃষকের ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে নগরের পাঁচলাইশ এলাকার ৯৫ জন কৃষকের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা রোপা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। এদিকে মিরসরাই উপজেলার ৭০ জন কৃষকের প্রায় ৮২ লাখ ২ হাজার টাকা, ফটিকছড়িতে ৬ হাজার ১৭৫ জন কৃষকের ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, হাটহাজারীতে ৪ হাজার ৫শ’ কৃষকের ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, রাউজানে ২ হাজার ৫ জন কৃষকের ৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, রাঙ্গুনিয়ায় ৩ হাজার ৬৮০ জন কৃষকের ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা, বোয়ালখালীতে ১ হাজার ১০ জন কৃষকের ৯০ লাখ টাকা, পটিয়ায় ৫২০ জন কৃষকের ৭৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, কর্ণফুলীতে ২২০ জন কৃষকের ২৮ লাখ ৮ হাজার টাকা, আনোয়ারায় ৬০ জন কৃষকের ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা, চন্দনাইশে ১০৫ জন কৃষকের ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা, লোহাগাড়ায় ৪ হাজার ৩২৫ জন কৃষকের ১১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, সাতকানিয়ায় ৫ হাজার ৩২০ জন কৃষকের ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, বাঁশখালীতে ১ হাজার ৫০ জন কৃষকের ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ও সন্দ্বীপে ১১২ জন কৃষকের প্রায় ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকার রোপা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে।
আমনের বীজতলায় ক্ষতি ১১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা

 

বন্যার কারণে আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে চট্টগ্রামের ৪২ হাজার ১৯০ জন কৃষকের ১১ কোটি ৩৩ লাখ টাকাম ক্ষতি হয়েছে। শুধু নগরের মধ্যে পাঁচলাইশ এলাকার ১২৫ জন কৃষকের আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

 

ভোরের আকাশ/মি