logo
আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ১২:০৬
কাজে আসছে না ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু
বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ

কাজে আসছে না ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু

মানিকগঞ্জে পাকা সড়কের ওপর নির্মিত সেতু

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক আজব সেতুর দেখা মিলেছে। সেতুটি কোনো নদীর উপরে নয়, দাঁড়িয়ে আছে পাকা রাস্তার উপরে। ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না স্থানীয়দের। এদিকে রাস্তার ওপরে সেতুটি থাকার কারণে দু’পাশের যানবাহন দেখা না যাওয়ার প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনের পাকা সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে আজব এই সেতুটি। দেখতে অনেকটা উড়াল সেতুর মতো। সেতুর দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। পাকা সড়কের মাঝেই তৈরি করা হয়েছে সেতুটি।

 

সেতুতে ওঠার জন্য সেতুর কোনো পাশেই নেই কোনো ব্যবস্থা। স্বাভাবিকভাবেই মাঝ রাস্তায় তৈরি এ সেতু কোনো কাজে লাগছে না স্থানীয়দের। তাহলে কেন ও কার জন্য অর্ধকোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হলো সেতুটি- সেই প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের। প্রায় এক যুগ আগে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও, স্থানীয়দের কখনোই কোনো কাজে আসেনি এই সেতুটি। ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় চল্লিশ ফুট উচ্চতার সেতুটি কেনইবা তৈরি করা হয়েছে তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে স্থানীয়দের। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি তৈরি করে সরকারের অর্থের অপচয় করা হয়েছে।

 

স্থানীয় রিকশাচালক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ব্রিজটি মনে হয় হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার জন্য বানাইছে এনারা। না হইলি কি আর কেউ শূন্যে ব্রিজ বানায়। এত ট্যাকা খরচ কইরা এই ব্রিজ বানাইয়া কি লাভ হয়ছি। এর জন্য আমাগো আরো অসুবিধা হইতাছে।’

 

স্থানীয় চাকরিজীবী নাজমুল হক বলেন, ‘রাস্তার উপরে নির্মিত সেতুটির কারণে একপাশ থেকে অন্যপাশের যানবাহন দেখা যায় না। এজন্য প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সেতুটি যদি কোনো কাজেই না আসে, তাহলে এটা রেখে লাভ কি? দ্রুত এটা অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

 

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ঘিওর থেকে পুরান ধলেশ্বরী নদীর ওপর তৈরি করা বেইলি সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কটি সোজা করতেই সেখানে একটি নতুন সড়ক ও আন্ডারপাস নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। প্রকল্প অনুযায়ী আন্ডারপাস তৈরি হলেও জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় সড়কটি করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে পরবর্তীতে প্রকল্পটি স্থগিত হয় এবং অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আন্ডারপাসটি।

 

মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, সরকার যখন কোনো প্রকল্প হাতে নেয়, তা অবশ্যই জনগণের কল্যাণের জন্য। কিন্তু অনেক সময় নানা সমস্যার কারণে এর সুফল পাওয়া যায় না। এই আন্ডারপাসটির বিষয়ে আলোচনা করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে এবং অপসারণের বিষয়টি নিয়েও একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/আসা