logo
আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ১৩:৪২
নেই সংযোগ সড়ক সেতুর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

নেই সংযোগ সড়ক
সেতুর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী

ক্যাপশন: মই বেয়ে সেতুতে উঠছেন স্থানীয়রা

স্বাধীনতার পর থেকে উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ অঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক বাড়ইয়া খেয়াঘাট এলাকায় সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছিল এলাকাবাসী। সেই দাবিতে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে সেতুটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তুর করা হয়। সেতুটি নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজেই আসছে না। আগে মানুষ যাতায়াত করতেন খেয়া নৌকা পার হয়ে এখন মই দিয়ে উঠে আবার মই দিয়ে নামতে হচ্ছে। দুপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি ২০১৯ সালে নির্মাণ করা হয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো সেতুটির দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি।

 

স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ অঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক বাড়ইয়া খেয়াঘাট এলাকায় সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছিল এলাকাবাসী। বড়হর থেকে উল্লাপাড়া উপজেলা সদরে যাতায়াতের আঞ্চলিক সড়কের বাড়ইয়া খেয়াঘাটে সেতু না থাকায় মানুষ নৌকা ও বাঁশের সাঁকোয় পারপার হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করত। এতে মাঝেমধ্যেই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটতো। সেতুর অভাবে কয়েক হাজার মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তি ছিল এ খেয়াঘাটে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য ২০১৯ সালে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর করেন উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম। প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সেতুটি নির্মাণ করে।

 

২০২২ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও দেড় বছরেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। এটি উল্লাপাড়া উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। স্থানীয়রা বলেন, এখানে দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সেতু নির্মাণ হয়েছে কিন্তু সংযোগ সড়ক না হওয়ায় আমরা সেতুর সুফল পাচ্ছি না। সংযোগ সড়ক না থাকায় মই দিয়ে উঠে যাতায়াত করতে হয়। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলে দুপাড়ের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। এজন্যই দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি পথচারীদের।

 

উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, সেতুটি ভুল পরিকল্পনায় নির্মাণ করা হয়েছে। যার কারণে কোটি টাকার সেতুতে মই দিয়ে উঠতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা। তবেই মানুষের ভোগান্তি দূর হবে। উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ সড়কের বাড়ইয়া গ্রামের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে যথাসময়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে ভূমি জরিপের কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু ওই ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য এখনো নির্ধারণ সম্পন্ন হয়নি। তাই সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ আছে। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই সেতুর বাকি কাজ শেষ করা হবে।

 

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, একটা ব্রিজ নির্মাণে বহুবিদ কাজ জড়িত থাকে। ইতোমধ্যেই ব্রিজটি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ভূমি মালিকদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে সেতু দিয়ে জনসাধারণ ও যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, সেতুটির বিষয়ে আমি ভালোভাবে অবহিত নই। প্রশিক্ষণ শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি