নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিরিশিরি হতে শান্তিপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রধান এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই লাখো মানুষ রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ বিভাগ, জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কের খানাখন্দ ও যানজট। ভেজা ও অতিবোঝাই বালু পরিবহনে সড়ক নষ্ট হয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
অন্যদিকে এইসব বালুবাহী গাড়ি থেকে চুইয়ে পড়া পানিতে সবসময়ই সড়কটি কাঁদাপানিতে একাকার হয়ে থাকে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেড়াতে আসা বিপুলসংখ্যক পর্যটকদের। জনদুর্ভোগ লাঘবে বিকল্প সড়ক প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলসহ সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে সড়কের শান্তিপুর, বিরিশিরি, শিমুলতলী, জারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা সদর থেকে জারিয়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কেরই বেহাল দশা। খানাখন্দ আর কোথাও কোথাও প্রায় দুই ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তে জমে রয়েছে পানি। পুরো সড়কজুড়ে কাঁদা। যেন পা ফেলাই দায়।
ওই সড়কটি দিয়েই শত শত যানবাহনসহ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় সড়ক সংস্কারের অংশ হিসেবে ২৪০০ মিটার পৃথক পৃথক স্থানে আরসিসি সড়ক নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। তবে সড়কের কিছু স্থানে এক পাশের কাজ শেষ হলেও ফেলে রাখা হয়েছে অন্যপাশের অংশটি। এতে সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে দীর্ঘ সময়ের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অসংখ্য যানবাহন চলাচল থাকায় সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রেখে এক সঙ্গে দুইপাশের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব না। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রায় সময়ই সড়ক সংস্কার কাজ করে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রাকে করে ভেজা ও অতিরিক্ত বালু পরিবহন করায় সড়কের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। সর্বদাই কাঁদায় ডুবে থাকছে সড়ক এবং দীর্ঘসময় যানজট লেগে থাকে। এতে করে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহনে করে ও পায়ে হেটে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, কাঁদা আর ট্রাকের জ্যামে এই সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল খুবই কস্ট হয়। আমার বাড়ি থেকে দুর্গাপুর যেতে ২০ মিনিটের রাস্তা এখন দুই ঘণ্টাতেও যেতে পারি না। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে এসব কারবার। ভিজা বালু পরিবহন বন্ধের দাবিতে কয়েকবার আমরা মানববন্ধন করেছি, স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এই দুরাবস্থা যেন দেখার কেউ নেই।
পথচারী আবদুল আলী জানান, এই সড়ক দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে উপজেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। তাছাড়াও জরুরি রোগীদের ময়মনসিংহ নিয়েও যেতে হয়। অনেক রোগী সঠিক সময়ে ময়মনািসংহে নিতে না পেরে রাস্তাতেই মৃত্যু বরণ করে। সড়কের এই অবস্থায় সময়মতো পৌঁছানোটাই ঝুঁকি হয়ে যায়।
ভোরের আকাশ/নি