logo
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ১০:৫৪
মধুখালীতে বাঁশ শিল্পের দুর্দিন
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

মধুখালীতে বাঁশ শিল্পের দুর্দিন

মধুখালীতে বাঁশের তৈরি সামগ্রী নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় কারিগর

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গুটিকয়েক পরিবারের কিছু মানুষ বাঁশের তৈরি বিভিন্ন উপকরণকে জীবিকার প্রধান বাহক হিসেবে আঁকড়ে রেখেছে। কিন্তু দিন দিন বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরেরা।

 

মধুখালী উপজেলা থেকে ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশশিল্প। বাঁশের তৈরি পণ্যের কদর আর তেমন নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটি। গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করলেও, এখন বিলুপ্তির পথে এ শিল্পটি।

 

বর্তমানে স্বল্প দামে হাতের নাগালে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় কুটিরশিল্পের চাহিদা এখন আর তেমন নেই। তা ছাড়াও দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ। এখন আর আগের মতো বাড়ির আশপাশে বাঁশের ঝোপ রাখছে না কেউ, সেগুলো কেটে বিভিন্ন চাষাবাদসহ দালান তৈরি করছে মানুষ।

 

তাই কাঁচামাল আর আগের মতো সহজেই পাওয়া যায় না। বাজারগুলো দখল করেছে প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিলসহ বিভিন্ন দ্রব্য। তা ছাড়াও প্লাস্টিক ও অন্যান্য দ্রব্যের পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চাহিদা এখন সেগুলোর ওপর।

 

একসময় দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালি ও শৌখিন পণ্যসামগ্রী। তৈরিকৃত পণ্য নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি, বাজারে বিক্রি করে চলত তাদের জীবনযাপন। তবে এখনো গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশের তৈরি কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচাং, মই, চাটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুঁড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন পণ্য সাজিয়ে বসে আছেন এ পেশার কারিগরেরা।

 

পৌর বাজারে বাঁশের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করতে আসা মো. আখেরউদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে মো. হান্নান বিশ্বাস বলেন, বাবার কাছ থেকে শিখে শিল্পটিকে ঘিরে জীবন পরিচালনা করছি। শিল্পের দুর্দিনে হাতেগোনা কিছুসংখ্যক পরিবার শিল্পটিকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও পূর্বপুরুষের হাতেখড়ি এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা।

 

তা ছাড়া বর্তমানে কাঁচামালের দাম বাড়ায় আমাদের তৈরিকৃত পণ্যেরও দাম বেশি নিতে হয়। পরিবারের সদস্যরা বাড়ির কাজের পাশাপাশি এ কাজে সহযোগিতা করে। প্রতি হাটে যা বিক্রি করি তা দিয়ে সংসার চালানো আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার যদি আমাদের দিকে দৃষ্টি দেয় তাহলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে পারব।

 

ভোরের আকাশ/নি