logo
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ১৫:১৮
শেরপুরে চাষ হচ্ছে মরুভূমির সুস্বাদু ত্বীন ফল
শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে চাষ হচ্ছে মরুভূমির সুস্বাদু ত্বীন ফল

শেরপুরের চাষি আরিফুল আলম রাসেলের ফল বাগানে শোভা পাচ্ছে ত্বীন ফল

ত্বীন মূলত মরুভূমির সুস্বাদু ফল। এ ফলের স্বাদ হালকা মিষ্টি। এটি দেখতে কিছুটা ডুমুর ফলের মতো। বাংলাদেশে ত্বীন ফল ড্রাই ফ্রুটস হিসেবে আমদানি করা হয়। ত্বীন ফল মরুভূমিতে চাষ হলেও গত এক দশকের বেশি সময় থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। এবার শেরপুর জেলা শহরে প্রথমবারের মতো চাষ করা হচ্ছে ত্বীন ফল।

 

এ ফল চাষি তার বাড়ির ভেতর ১৫ শতক জমিতে মূলত মিশ্র বারোমাসি ফল বাগানের সঙ্গে চাষ করে। এ ত্বীন ফলের ২০টি চারা রোপণের পর এক বছরের মাথায় প্রচুর ফল আসে গাছে। তবে এ ফল বিক্রি না করে নিজেরা এবং আশপাশের লোকজন এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিতরণ করেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ত্বীন ফল বাগানের ইচ্ছে রয়েছে বলে জানান ফল চাষি ওই বাগান মালিক।

 

জানা গেছে, শেরপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কান্দাপাড়া মহল্লার আরিফুল আলম রাসেল তার প্রায় দের একর পৈতৃক বাড়ি ভিটের মধ্যে ১৫ শতক জমিতে কয়েক বছর আগে বারোমাসি মিশ্র ফল বাগান করেন।

 

চাষি আরিফুল ইসলাম রাসেল জানান, তিনি যখন জর্ডানে সফরে যান তখন এ ত্বীন ফলের বাগান দেখেন। আমাদের দেশে এ ফলের বিশেষ করে শুকনো ত্বীন ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক হাজার টাকা কেজি দরে শুকনো ত্বীন ফল বিক্রি হয়। তবে পাকা ফলেরও চাহিদা রয়েছে দেশে। তাই সে এ ত্বীন ফলের বাগান করার উদ্দেশে প্রাথমিকভাবে গত বছর জুন মাসে মাত্র ২০টি চারা বগুড়া থেকে সংগ্রহ করে রোপণ করেন তার মিশ্র বাগানে।

 

এক বছরের মধ্যেই ব্যাপক ফলন হয় প্রতিটি গাছে। এ বছর তিনি ২০টি গাছ থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ কেজি ফল পেয়েছেন। রাসেলের বাড়ির লোকজনও এ ত্বীন চাষ নিয়ে বেশ খুশি এবং তারা আশা করছে আগামীতে আরো বেশি করে গাছের চারা রোপণ করবে।

 

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, মাঠে ও ছাদে টবে লাগিয়ে ফল উৎপাদন সম্ভব। এটির কাটিং চারা লাগানোর চার থেকে পাঁচ মাস পর থেকেই ফল দিতে শুরু করে। প্রতিটি গাছ থেকে ১ম বছরে ১ কেজি, ২য় বছরে ৭ থেকে ১১ কেজি, ৩য় বছরে ২৫ কেজি পর্যন্ত ফল ধরে। এভাবে টানা ৩৪ বছর পর্যন্ত ফল দিতে থাকে। গাছটির আয়ু হলো প্রায় ১০০ বছর। প্রতিটি পাতার গোঁড়ায় গোঁড়ায় ত্বীন ফল জন্মে থাকে। প্রতিটি গাছ ৬ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং একটি গাছে ৭০ থেকে ৮০টি ফল ধরে।

 

ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণের ভিটামিন-এ, বি, সি, কে, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন, কপারসহ কার্বোরাইড থাকায় বাজারে এর বেশ চাহিদা রয়েছে।

 

কৃষি বিভাগের পৌর এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, আরব দেশের এ ত্বীন ফল নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। গাছ ও ফল দেখে আশা করছি প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ এ ত্বীন ফল চাষ বাণিজ্যিকভাবে করা সম্ভব। আমরা এ ফল চাষে কৃষকদের নানা সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।

 

ভোরের আকাশ/নি