নিখিল মানখিন: রাজনীতিতে বইছে গুমোট হাওয়া। চলছে বিদেশি কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদদের নানাবিধ তৎপরতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে যেন গুঞ্জনের শেষ নেই। এমন পরিস্থিতিতে দেশের রাজনীতিতে বিএনপিকে ছাপিয়ে গিয়ে শুরু হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গ। তার পক্ষাবলম্বন করে শতাধিক নোবেল বিজয়ীর খোলা চিঠি এবং সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বক্তব্যেও রয়েছে রাজনীতির গন্ধ।
বিগত সময়েও ড. ইউনূসের মধ্যে রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ এবং রাজনীতি করার প্রবল আগ্রহ প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্বাসী। বিএনপি ড. ইউনূসকে নিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখছে বলে ইতোমধ্যে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সব ডিঙিয়ে দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ড. ইউনূস।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগেও দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাগযুদ্ধ ও মাঠযুদ্ধে অস্থির ছিল রাজনৈতিক মাঠ। দল দুটির পাল্টাপাল্টি আন্দোলন ছাপিয়ে আলোচনার সামনে চলে এসেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস। কর ফাঁকি, মানিলন্ডারিং, শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে একের পর এক মামলার বিপরীতে এসব মামলা স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিশ্ব নেতাদের ‘খোলা চিঠি’ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। এরই মধ্যে ইউনূস ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও মুখ খুলেছেন।
এদিকে বিএনপি ড. ইউনূসকে নিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখছে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে হটাতে পারেনি। তাই ড. ইউনূসকে নিয়ে নতুন খেলা শুরু করেছে বিএনপি। বাংলাদেশের মাটিতে তাদের এ অশুভ খেলা খেলতে দেয়া হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন এখন আর জমে না। ওয়ান-ইলেভেনের মতো ইউনূসের নেতৃত্বে একটা নতুন সরকার এমন কথা-বার্তা বাজারে এসেছে। সেই দুঃস্বপ্ন দেখছেন কিনা, জানি না। ইউনূস সাহেবের খায়েশ ছিল, সে খায়েশ এখনো পূর্ণ হয়নি।
ড. ইউনূসের পক্ষে হিলারি ক্লিনটনের আহব্বান: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক ও এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়েছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। গত মঙ্গলবার দেয়া পোস্টে হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘মহান মানবতাবাদী ও নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রয়োজনের মুহূর্তে তাকে সমর্থন জানাতে আমার ও ১৬০ জনের বেশি বিশ্বনেতার পাশে দাঁড়ান। মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে যোগ দিন।’
প্রধানমন্ত্রীকে শতাধিক নোবেলজয়ীর খোলা চিঠি: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিয়ন পিআর নিউজওয়্যার তাদের ওয়েবসাইটে এ চিঠি প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে চিঠিতে বলা হয়, নোবেল বিজয়ী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতৃস্থানীয় এবং বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে আমরা আপনার কাছে লিখছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে আপনার দেশ যেভাবে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা আমরা স্বীকার করছি।
অবশ্য সম্প্রতি বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি যে হুমকি দেখা গেছে, তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং নির্বাচনকালীন প্রশাসন দেশের প্রথম সারির দলগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিগত দুটি নির্বাচনের বৈধতার ঘাটতি রয়েছে। আমরা আশা করি, আপনি এসব আইনগত বিষয়ের যথাযথ, নিরপেক্ষ ও ন্যায্যতা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবেন। পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করবেন। একইসঙ্গে সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো নিশ্চিত করবেন।
আগামী দিনগুলোয় এসব বিষয়ের সুরাহা কীভাবে হবে, তা দেখার জন্য বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ নজর রাখছে। আমরাও সেই সব মানুষের কাতারে রয়েছি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ২৭ আগস্ট ইউনূসকে লেখা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সই করা একটি চিঠিও প্রকাশিত হয়। চিঠির একটি ছবি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন ড. ইউনূস। তাতে দেখা যায়, চিঠিতে তারিখ ১৭ আগস্ট উল্লেখ রয়েছে। ওই চিঠিতে মামলার কথা স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলেও ‘ড. ইউনূস স্বাধীনভাবে নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো চালিয়ে যাবেন’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. ইউনূসের পুরোনো রাজনৈতিক উদ্যোগ: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসিতে চলতি বছরের ৩১ মে প্রকাশিত ‘অধ্যাপক ইউনূসের রাজনীতির চেষ্টা ও সেখান থেকে সরে আসা’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নোবেল পুরস্কার লাভ করার মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই রাজনৈতিক দল গঠন করা কার্যক্রম শুরু করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সমর্থনে এবং ফখরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত¡াবধায়ক সরকার গঠিত হয়। এর কিছুদিন পর থেকেই অধ্যাপক ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠনের গুঞ্জন শুরু হয়। যদিও ফখরুদ্দিন আহমদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার আগে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। ওয়ান ইলেভেনের এগারো বছর পর, একটি লেখার প্রতিক্রিয়ায় ২০১৮ সালের জুন মাসে বিবৃতির মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনুস কেয়ারটেকার সরকারপ্রধান হওয়ার আকাক্সক্ষার কথা জোর গলায় অস্বীকার করেছিলেন।
গবেষক-লেখক মহিউদ্দীন আহমেদ একটি লেখায় দুজন সেনা কর্মকর্তার বরাতে লিখেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস কেয়ারটেকার সরকারপ্রধান হওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার প্রধান কারণ ছিল এ সরকারের স্বল্প মেয়াদ। সে লেখার প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ইউনূস বিবৃতির মাধ্যমে জানান, ‘সেনাবাহিনীর প্রস্তাবে আমি কেন রাজি হইনি এ বিষয়ে যে কারণ তারা উল্লেখ করেছেন, তা একেবারেই কল্পনাপ্রসূত।
একেবারে হদ্দ বোকা না হলে একজন অরাজনৈতিক বেসামরিক ব্যক্তি সেনাবাহিনীর নিকট তাকে দীর্ঘমেয়াদের জন্য একটি সরকারের প্রধানের পদে রাখার এরকম আবদার করার কথা কখনো চিন্তা করতে পারবে না।’ পরবর্তী সময়ে ড.ইউনূস সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভারত সফরে যান। সে সফরে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেয়ার জোরালো সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৩১ জানুয়ারি দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশের পরিস্থিতি বাধ্য করলে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন। ২০০৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূস দেশের মানুষের উদ্দেশে খোলা চিঠি দেন। সে চিঠিতে তিনি নিজের রাজনীতি সম্পর্কে পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সে চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নতুন রাজনীতি সৃষ্টির জন্য প্রচন্ড উদ্যোগ নিতে হবে। এটি করতে না পারলে পুরোনো রাজনীতি থেকে পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না। খোলা চিঠিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আল্লাহর অসীম রহমতে আমি এক অতিশয় ভাগ্যবান মানুষ। আমার পাওয়ার আর কিছু অবশিষ্ট নেই।’ ২০০৭ সালের ৩ মে অধ্যাপক ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন। এজন্য তিনি জাতির উদ্দেশে একটি চিঠি প্রকাশ করেন।
সে চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, যাদের সঙ্গে পেলে দল গঠন করে জনগণের সামনে সবল ও উজ্জ্বল বিকল্প রাখা সম্ভব হতো তাদের আমি পাচ্ছি না। আর যারা রাজনৈতিক দলে আছেন তারা দল ছেড়ে আসবেন না। ‘বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এ পথে অগ্রসর না হওয়াই সঠিক হবে মনে করে এ প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, চিঠিতে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
মামলা: গত ৩০ মে ড. ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরো ১২ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে গ্রামীণ টেলিকমের ১৭৬ কর্মচারী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ১১০টি মামলা করেছিলেন। এর মধ্যে শ্রম আদালতে ১০৪টি ও হাইকোর্টে ছয়টি মামলা হয়েছিল। সব মিলিয়ে ৪৩৭ কোটি টাকা দাবি করে মামলা করেছিলেন ওই শ্রমিকরা। প্রায় ৫ বছর ধরে মামলা চলার পর ২০২২ সালের মে মাসে আদালতের বাইরে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ১১০টি মামলার সবক’টি প্রত্যাহার করা হয়।
এছাড়া ড. ইউনূস দানকর মামলায় উচ্চ আদালতে পরাজিত হয়ে ১২ কোটি টাকার বেশি দান কর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে একটি তদন্ত করছে। সেই অভিযোগে বলা হয়, ড. ইউনূস অন্যদের যোগসাজশে ৫ হাজার কোটি টাকা গ্রামীণ টেলিকম থেকে পাচার করেছেন।
ড. ইউনূসকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ‘উদ্বেগের’ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট গণমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, আত্মসম্মান না থাকায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি বিবৃতি ভিক্ষা করছেন। তিনি বিচার বন্ধের কথা না বলে বিবৃতিদাতা বিশ্বনেতাদের বাংলাদেশে এক্সপার্ট পাঠানোর আহব্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, যদি এতই দরদ থাকে তারা ল-ইয়ার পাঠাক। মামলার সব দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখুন। তারাই দেখে বিচার করে যাক এখানে কোনো অপরাধ আছে কিনা।
আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে মন্তব্য করে ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভদ্রলোকের এতই যদি আত্মবিশ্বাস থাকতো যে তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।’ মামলায় সরকারের কোনো হাত নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মামলা তারা করেননি। তিনি বলেন, আদালত স্বাধীনভাবেই কাজ করবে। আদালত ন্যায় বিচার করবে। লেবারদের যেটা পাওনা, সেটা তো তাদের দিতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে বাংলাদেশের আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বেআইনি ও অযৌক্তিক দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তির খোলা চিঠির ঘটনাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় হুমকি বলে মনে করেছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে নেতারা এসব কথা বলেন।
ভোরের আকাশ/নি