শাহীন রহমান: দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গত শনিবার এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন যখন প্রায় আসন্ন, ঠিক তখনই আরো এক দফা সংলাফের উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি।
জানা গেছে, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ মুহূর্তে সংলাপ না হলেও সুশীল সমাজ ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এ সংলাপের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বসতে প্রস্তুতি রয়েছে ইসি।
জানা গেছে, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ইসির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয়া হচ্ছে। সংলাপে অতিথি তালিকায় সুশীল সমাজ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদেরও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
দিন-তারিখ ঠিক না হলেও জানা গেছে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ সংলাপ শুরু হতে পারে। ইতোমধ্যে সংলাপে যারা অংশ নেবেন, তাদের চিঠি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কিছু বলেনি। যদি নির্বাচন কমিশন বলে আমরা সংলাপের আয়োজন করব। তবে একটি সেমিনারের মতো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন সুধীজনের উপস্থিতিতে এ মাসেই এটি হবে। সম্ভবত ১১ বা ১৩ তারিখে। তবে তারিখটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
দিনক্ষণ ঠিক না হলেও আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন এগিয়ে আসায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছে নির্বাচন কমিশন। গত শনিবার এ নির্বাচনের যারা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এছাড়া এ মাসেই চূড়ান্ত করা হচ্ছে সারা দেশে ভোটকেন্দ্রের তালিকায়। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী নভেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জানা গেছে, সমাজের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য মতামত জানতেই ইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সমাজের সুধীজন যারা আছেন, নির্বাচন বিষয়ে এক্সপার্ট যারা আছেন, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। গণমাধ্যম ব্যক্তিদের এ সংলাপে ডাকা হতে পারে।
ইসি সূত্র জানায়, অনুষ্ঠেয় বৈঠককে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘আলোচনা-পর্যালোচনা বৈঠক’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসির করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের মতামত বা তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা বিনিময় বৈঠকে গুরুত্ব পেতে পারে। কারণ এতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদেরও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।
জানা গেছে, সুশীল সমাজের পর পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলসহ অন্যদের সঙ্গেও বসতে পারে ইসি। যদিও কমিশন থেকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছিল, দলগুলোর সঙ্গে আর বসা হবে না। বিশেষ করে বিএনপি ও তাদের সমমনারা যেহেতু কমিশনের ডাকে কোনো সাড়া দেয়নি, তাই তাদের সঙ্গে আর বসার কোনো পরিকল্পনা কমিশনের নেই।
গত বছর ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত নাগরিক সমাজ, শিক্ষাবিদ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করে কমিশন। যদিও বিএনপি ও তাদের সমমনা ৯টি দল এতে অংশ নেয়নি।
ভোরের আকাশ/নি