logo
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৫:৫৬
রাজশাহীতে ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট ও এডিনিয়ামের ফার্ম
অজয় ঘোষ, রাজশাহী

রাজশাহীতে ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট ও এডিনিয়ামের ফার্ম

রাজশাহীতে পঙ্কজের ‘সাকুলেন্ট প্যারাডাইস’ এ দর্শনার্থীরা

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের পঙ্কজ কুমার মহন্ত। ইতিমধ্যেই রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। শখের বসে বাগান করতেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম তৈরি এবং বিক্রয় করাকে দিয়েছেন বাণিজ্যিক রূপ।

 

চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় তার বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। পঙ্কজ কেউরাজোরা তার পৈতৃক ৩০ শতক জমির ওপর তৈরি করেছেন এই ফার্ম। তিনি ভারত, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে ইনপোটারদের মাধ্যমে চারা সংগ্রহ করেন।

 

নিজের ফার্মে সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন পঙ্কজ। বাজারে বাড়তে থাকা চাহিদা এবং ভালো দামের কারণে এগিয়ে আসছে অনেক বেকার যুবক। এই সৌন্দর্যবর্ধক গাছচাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সরকারি সহায়তা চান তারা। আর পঙ্কজের পুরো ব্যবসাই অনলাইনভিত্তিক।

 

বর্তমানে বাগানের পলি হাউসের নিচে কিছুটা উঁচু চৌকির ওপর চাষ করেছেন প্রায় ৩০০ প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম। তাই নিজের বাগানের নাম রেখেছেন ‘সাকুলেন্ট প্যারাডাইস’। সাকুলেন্ট এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ, যা পানি সংগ্রহ করে জমা রাখে শরীরে। এজন্য তাদের পাতা বেশ পুরু ও রসালো হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সাকুলেন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের জন্য বিখ্যাত। আমাদের দেশে বাসাবাড়ির সজ্জার জন্য কিংবা বাগানের জন্য এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

 

সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা দামের গাছ আছে তার বাগানে। আর সাকুলেন্টের দাম ২৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা। তবে সহজ শর্তে ঋণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এর চাষ আরো বাড়বে বলে দাবি স্থনীয়দের।

 

পঙ্কজ কুমার মহন্ত বলেন, ছোট বেলা থেকে গাছাপালার প্রতি আমার আলাদা একটা আকর্ষণ ছিল। শহরে লেখাপড়ার সময় আমি ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সম্পর্কে জানতে পারি। তখন থেকেই আমি ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সংগ্রহ করা শুরু করি। এখন আমার ফার্মে ২৫০ থেকে ৩০০ প্রজাতির সাকুলেন্ট এবং ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস আছে এবং সাকুলেন্টের একক ফার্ম হিসেবে এটা আমার জানা মতে বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফার্ম এবং আমার এই অর্জনটার পেছনে আমাদের এখানকার যে কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছেন তারা আমাকে সার্বক্ষণিক সাহায্য ও সহযোগিতা করেন এবং যেকোনো সমস্যায় আমি তাদের দ্বারস্থ হই।

 

তিনি আরো বলেন, এগুলো বিক্রি করার জন্য সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হলো অনলাইন। আর বর্তমানে এটা অফলাইনেও ভালো বিক্রি হয়। অনেকেই বাইরে থেকে আমার ফার্ম দেখতে আসে। আমার যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সেটা হচ্ছে, আমি এটা করে সবার কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই যে, নিজের ইচ্ছাতেই অনেক কিছু করা যায়।

 

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবির মাহামুদ জানান, আমাদের উপপরিচালক ও কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আমরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সবসময় আসি এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করে থাকি। এই ফার্ম দেখে এলাকার অনেক তরুণ যুবক তারা উদ্যোক্তা হিসেবে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় পঙ্কজ কুমার অনেকটা স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। আমরা তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

 

ভোরের আকাশ/নি