logo
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১০:৫১
কুতুবদিয়ার অদূরে উঁকি দিচ্ছে সম্ভাবনার ‘মায়াদ্বীপ’
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কুতুবদিয়ার অদূরে উঁকি দিচ্ছে সম্ভাবনার ‘মায়াদ্বীপ’

কুতুবদিয়ায় জেগে উঠেছে ‘মায়াদ্বীপ’

অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া। এ দ্বীপের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠেছে সম্ভবনাময় আরেকটি দ্বীপ। স্থানীয়রা যার নাম দিয়েছেন ‘মায়াদ্বীপ’। এটি জোয়ারের সময় অর্ধেক ডুবে, ভাটার সময় পুরোটাই জেগে ওঠে। এ দ্বীপের বৈশিষ্ট হচ্ছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। পড়ন্ত বিকেল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ সময়টাতে এর সৌন্দর্য অপরূপ।

 

শেষ বিকেলে সূর্যের আলো বুকে নিয়ে দ্বীপটি যখন জেগে ওঠে তখন স্বর্গীয় এক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে দ্বীপজুড়ে। কুতুবদিয়া থেকে পশ্চিমে এ দ্বীপের দূরত্ব প্রায় আড়াই থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার। এই মায়াদ্বীপ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অনন্য আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে চিহ্নিত হবে, সেদিন খুব বেশি দূরে নয়।

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্তবিদ ড. আবদুল হক জানিয়েছেন, নতুন এ দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপের চাইতে অনেক বড়। তবে এ দ্বীপে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তৈরি করে যথাযথ পরিচর্যা করা হলে ৫-৬ বছরের মধ্যে এ দ্বীপ ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। আর যদি সাগর থেকে মাটি উত্তোলন করে দ্বীপটি ভরাট করা হয় তবে মানুষ, প্রাণ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের সমাহার ঘটাতে সময় লাগবে ২ থেকে ৩ বছর। ফলে এ দ্বীপ কক্সবাজারের আরেকটি পর্যটন স্পট হিসেবে নয়া দিগন্তের সূচনা করবে।

 

স্থানীয়দের মতে, ২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান ফেনী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুজন চৌধুরীর নেতৃত্বে কুতুবদিয়া কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দুলাল কান্তি বড়ুয়ার আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা এ দ্বীপটি পরিদর্শন করেন। এ সময় দ্বীপটি বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ জনআকাক্সক্ষানুযায়ী এ দ্বীপকে ‘মায়াদ্বীপ’ হিসেবে প্রস্তাব করেন। সেই থেকে এ নামটি পরিচিতি পায়।

 

কুতুবদিয়া খেলোয়াড় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রশিদ বাদশা বলেন, শীত মৌসুমে বিকেলের দিকে তারা দল বেঁধে নৌকায় চড়ে মায়াদ্বীপে ফুটবল খেলতে যায়। উপযুক্ত মাঠ ও পরিবেশের কারণে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য আরেকটি নতুন উপহার এই মায়াদ্বীপ।

 

জেলে ফরিদ আলম, গিয়াস উদ্দিন, মানিকসহ অনেকেই বলেন, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া আসার পথে নৌকাটি দক্ষিণ পাশ দিয়ে চালাতে হয়। তাদের একটু কষ্ট হলেও এ দ্বীপটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কুতুবদিয়াকে রক্ষা করবে।

 

কক্সবাজার জেলা আঞ্চলিক পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা সুপানন্দ বড়ূয়া বলেছেন, মায়াদ্বীপের কারণে কুতুবদিয়া দ্বীপটি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে। মায়াদ্বীপকে নিয়ে সরকারিভাবে উন্নয়নের পরিকল্পনা করলে বড় ধরনের সুফল পাবে বলে মনে করেন তিনি। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঢলও নামবে সেখানে।

 

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, আমরা যদি বিমানবন্দরের রানওয়ের জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করতে পারি, মাতারবাড়িতে কোহেলিয়া নদী ভরাট করে সড়ক নির্মাণ করতে পারি ও ধলঘাটাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করে ভ‚মি উদ্ধার করতে পারি। তাহলে প্রায় ৬০-৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জেগে উঠা চরকে কাজে লাগাতে পারব না কেন।

 

ভোরের আকাশ/নি