বাবলুর রহমান বারী, রংপুর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে সরকারের অধীনে ভোট হলে জনগণ ভোট দিতে পারে না, ভোট চুরি ও ডাকাতি হয় তাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যায় না। তাই শুধু বিএনপি নয়, দেশের সকল রাজনৈতিক দল বলেছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট আমাদের সঙ্গে নেই কিন্তু তারাও ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
শনিবার বেলা ১১টায় রংপুর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এই রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া প্রয়োজন। নিজেরা বারবার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করালেও বেগম খালেদা জিয়াকে যেতে দিচ্ছে না এই সরকার।
তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তাই এবার আমরা ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে নেমেছি। যদি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যেতে পারি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাচন-পরবর্তী সময় আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। তিনি বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সারাদেশের তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। এই সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরে যাবো না।
রংপুর থেকে তারুণ্যের রোডমার্চ শুরু করা প্রসঙ্গ মির্জা ফখরুল বলেন, রংপুরের একটা বিরাট ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্য হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ঐতিহ্য। এই রংপুরে ব্রিটিশ আমলে কৃষকদের বিপ্লবের মধ্যদিয়ে তেভাগা আন্দোলন হয়েছিল। রংপুরকে নিয়েই আপনাদের কৃতী সন্তান সৈয়দ শামসুল হক লিখেছেন নূরলদীনের সারাজীবন। সেই নূরলদীনের বিপ্লব বিদ্রোহ রংপুর থেকেই, সেদিন নূরলদীন ডাক দিয়েছিল ‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়’। আজকে রংপুর থেকেই আবার এই তরুণরা বাংলাদেশের মানুষকে ডাক দিচ্ছে- এই ভয়াবহ একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদ, লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য।
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে রংপুর-দিনাজপুর তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি রংপুর নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় জাসাস শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে লংমার্চের কর্মসূচির প্রথম পর্ব শুরু হয়। তারুণ্যের রোডমার্চ রংপুর থেকে শুরু করে দিনাজপুরের দিকে যাত্র শুরু করে। এর আগে সকাল থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হন।
সকাল সাড়ে ১১টায় বিএিনপির রংপুর দলীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক দল সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রংপুর মহানগর বিএনপির আহব্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির আহব্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষকদল, তাঁতী দল, মহিলা দল, ওলামা দল এবং জাসাসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/নি