logo
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:৩০
সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তানের হাতে খণ্ডবিখণ্ড হাসান
অনলাইন ডেস্ক

সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তানের হাতে খণ্ডবিখণ্ড হাসান

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকায় লাগেজে পাওয়া খণ্ডবিখণ্ড মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থাটি। ঘটনায় জড়িত ভুক্তভোগীর স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।

 

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, সম্পত্তি লিখে না দেওয়ার বিরোধকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও সন্তানরা মিলে ভুক্তভোগীকে হত্যা করে।

 

পুলিশ জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে ওই লাগেজে ভুক্তভোগীর মাথা না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

 

এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদেরকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

এদিকে, খণ্ডবিখণ্ড এই মরদেহ পরিচয় শনাক্ত ও রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামেন পিবিআই কর্মকর্তারা। তারা প্রথমে ফিঙ্গার প্রিন্টের সহায়তায় নিহত ব্যক্তি মো. হাসান (৬০) বলে শনাক্ত করেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হাসান বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা লেখা আছে সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির এলাকায়।

 

পিবিআই জানায়, অন্তত ৩০ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। গত এক বছর আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেগুলো নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য হাসানের স্ত্রী এবং সন্তানরা চাপ দিতে থাকেন।

 

কিন্তু তিনি বিষয়টিতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে। এটি হাসানের ছোট ছেলের বাসা ছিল।

 

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে আকমল আলী রোডের সেই বাসা থেকে হাসানের ছেলেকে বস্তায় ভরে মরদেহ বের করতে দেখা যায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানা গেছে ১৯ সেপ্টেম্বর হাসান, তার স্ত্রী ও দুই ছেলের অবস্থান বাসাটিতে ছিল। ওইদিনই সম্পত্তি লিখে দেওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে হাসানকে খুন করা হয়।

 

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তরা মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো কয়েকভাগে ফেলে দেয়, যাতে হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাওয়া না যায়। কিন্তু পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে হাসানের মরদেহের অবশিষ্ট অংশ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।

 

এ ঘটনায় জড়িত হাসানের আরেক ছেলেসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

ভোরের আকাশ/নি