বগুড়ার শিবগঞ্জে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কচুর মুখী চাষে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে প্রান্তিক কৃষকরা বিগত দুই বছর ভালো লাভ করতে না পারায় এবার তুলনামূলকভাবে কচুর চাষ অনেকটা কম করেছে বলে জানান। এছাড়া অন্য বছরের তুলনায় এবার ফলন এবং দাম দুটোই ভালো হওয়ায় কচু চাষিরা খুশি।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, শিবগঞ্জ উপজেলায় সারা বছর ৫২০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় কচু। কোনো লক্ষমাত্রা না থাকলেও খরিপ-১ মৌসুমে উপজেলার প্রায় ২১০ হেক্টর জমিতে এবার কচুর চাষ হয়েছে।
উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের গনেশপুর গ্রামের কচু চাষি রুহুল আমিন ও বাঘমারার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কচু চাষে জৈবসার বেশি লাগলেও এ ফসলে কীটনাশকের ব্যবহার নেই বললেই চলে। ধান ও অন্য সবজি চাষের তুলনায় কচু চাষে খরচ অনেকটা কম এবং এ ফসলে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি লাভ হয়।
শিবগঞ্জ ইউনিয়নের ধোন্দাকোলা এলাকার কৃষক চান্দু পোদ্দার বলেন, ‘এবার বিঘাপ্রতি ৬০ মণ করে কচু উৎপাদন হয়েছিল। পাইকারি হিসেবে সবমিলে ২ লাখ টাকা বিক্রি করেছি। আর প্রতি বিঘাতে খরচ হয়েছিল প্রায় ৪০ হাজার টাকা।’ পাইকার মামুন শেখ ও আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা এ মৌসুমে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে প্রায় ১০০ বিঘা জমির কচু কিনেছি। জমি থেকে কচু উত্তোলন, বাছাই করতে পুরুষের পাশাপাশি দেড় শতাশিক নারী প্রতিদিন কাজ করছে। আর জমি থেকে কচু উত্তোলন থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত খরচ বাদে প্রতি বিঘাতে ১৮-২০ হাজার পর্যন্ত লাভ হয়। এবং এই কচুগুলো স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
কচু বাছাই কাজে নিয়োজিত নারী খাতিজা আকতার ও রাহেলা বেগম বলেন, ‘সংসারিক কাজের পাশাপাশি গত ২ মাস ধরে কচু বাছাই এর কাছ করছি। অবসর সময় কচু বাছাই করলে প্রতিদিন ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা রোজগার হয়।’ মোকামতলা বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন জানান, বর্তমানে কুড়ি কচু ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা বিগত বছরের তুলনায় দাম বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার বলেন, কচু একটি লাভজনক ফসল। এ এলাকায় কচুর চাষ বৃদ্ধি পেলেও কয়েক বছর দাম ভালো না পাওয়ায় চাষ কিছুটা কম হয়েছে। কুড়ি কচু চাষে কৃষকরা কম সময়ে লাভবান হতে পারে। প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন খরচের দ্বিগুণের বেশি লাভ হয় বলে এ এলাকার কৃষক কচু চাষের দিকে ঝুঁকছে।
ভোরের আকাশ/নি