জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে প্রকৃতিকভাবে রোপা আমন ধানের পোকামাকড় দমনে উপকার হলেও উপজেলার আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেতগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি হিসেবে মুলা, মরিচ, শিম, লাউ, ফুলকপি, বাধাকপির খেত লাগানো হলেও অতিবৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকার কারণে নষ্ট হতে শুরু করেছে। এতে কৃষকের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে অতিবৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন। সারা দিনে যা রোজগার হচ্ছে তা দিয়ে তাদের সংসারের খরচ চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অনেকেই এনজিওর কিস্তি পরিশোধে হাত বাড়াচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীদের নিকট।
উপজেলার আটুল গ্রামের অটোচালক মাহবুব বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তায় লোক চলাচল নেই। যাত্রীর অভাবে রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। সংসারের খরচ করব কী দিয়ে, আর এনজিওর কিস্তিই বা দিব কেমনে। উচাই গ্রামের ভ্যানচালক আবু সিদ্দিক বলেন, বৃষ্টির কারণে গত দুদিন ধরে কোনো আয় না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্ভোগে পরেছি।
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামে কৃষক রোস্তম আলী বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছিলাম। এবার জমিতে ভাল মুলা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় মুলাগুলো নষ্ট হতে শুরু করেছে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। একই গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় কচুক্ষেত তুলে আগাম মরিচ চাষাবাদ করেছিলাম। কিন্তু পানির কারণে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার খাসবাট্টা গ্রামের কৃষক মিনাজুল ইসলাম বলেন, এবার ২ বিঘা জমিতে আগাম বাধাকপি চাষ করেছিলাম। অতিবৃষ্টির কারণে বাধাকপির চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে আগাম সব্জি চাষের জমি তৈরিতে বিলম্ব হবে। এছাড়া ইতোমধ্যে লাগানো কপিগাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, আগাম রবি শষ্য চাষ কৃষকদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এমন আগাম রবি শষ্যের জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ভোরের আকাশ/নি