logo
আপডেট : ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:৪০
পোলিং এজেন্টদের আচরণ বিধিমালা তৈরি উদ্যোগ
শাহীন রহমান

পোলিং এজেন্টদের আচরণ বিধিমালা তৈরি উদ্যোগ

শাহীন রহমান: নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তারা ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তবে নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও অধিকাংশ এজেন্ট তাদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে জানেন না। ফলে তৈরি হয় এক ধরনের জটিলতা। আর এই জটিলতার নিরসনের উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমবারে মতো তাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে আচরণ বিধিমালা।

 

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিশাল প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি। এবারই প্রথমবারের মতো এজেন্টদের নিয়ে প্রশিক্ষণসহ তাদের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া চিন্তা-ভাবনা করছে।

 

তারা বলছেন, ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করা দায়িত্ব যারা প্রার্থী হবে তাদের। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাই মূলত এই দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় নির্বাচনে তিনশ’ আসনের দায়িত্ব পালন করা এজেন্টদের সংখ্যা বিশাল। ফলে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিলে তারা পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে পারবে। তাদের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে আরপিওতে স্পষ্ট থাকলেও আচরণ বিধিমালা করা হয়নি। ফলে প্রথমবারের মতো আচরণ বিধিমালায় করার চিন্তাভানাও করছে ইসি।

 

এদিকে আজ বুধবার পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালন করা সাবেকদের ডাকা হয়েছে। তারা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। কর্মশালার বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘অবাধ ভোটাধিকার- প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টের ভূমিকা। এতে সাবেক নির্বাচন কমিশনার, সাংবাদিক, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলিয়ে ১২ জন অংশ নেবেন।

 

ইসি বলছে, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি রোধে প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টের ভূমিকা, প্রার্থী কী ধরনের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করবেন এবং কীভাবে তাঁকে দায়বদ্ধ করবেন এসব বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে। পর্যায়ক্রমে আরো কয়েকটি কর্মশালা আয়োজন করার চিন্তা আছে ইসির। জানা গেছে প্রস্তুতি পর্যালোচনামূলক বৈঠকে এসব বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করা হবে।

 

তবে পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা পাশাপাশি চলছে বিধিমালা প্রস্তুতের কাজও। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই পোলিং এজেন্টদের জন্য আচরণ বিধিমালা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নির্বাচনের সময় একজন পোলিং এজেন্টেরা কী করবেন এবং কী করবেন না, তা আচরণ বিধিমালায় নির্ধারণ করে দেয়া হবে।

 

ইসি সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্রে যেসব পোলিং এজেন্ট থাকেন, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন না। তারা এটাও জানেন না, কেন তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। এ জন্যই মূলত কমিশন এই বিষয়ে লিখিত আকারে আচরণ বিধিমালা তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এটি হলে পোলিং এজেন্টরা সহজেই তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তার বক্তব্যে নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদের গুরুত্বের কথা জানান।

 

তিনি বলেন, পোলিং এজেন্টরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে নির্বাচনী অনিয়ম অনেকাংশে কমে যাবে।

 

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কমিশনে কাজ করে গেছেন এমন কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনার, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারও থাকবেন কর্মশালায়। তারা এই বিষয়ে মতামত দেবেন। সেখান থেকে পাওয়া পরামর্শের আলোকে পোলিং এজেন্টদের জন্য আচরণ বিধিমালা তৈরি করা হবে। পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বহু দেশে পোলিং এজেন্টদের জন্য কোড অব কনডাক্ট আছে। পোলিং এজেন্টরা কী ধরনের কাজ করবেন, এই জিনিসটি দেশে কোথাও লেখা নেই। এই জন্য বিষয়টি জানা দরকার। আমরা চাচ্ছি, পোলিং এজেন্টরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আসুক। তারা তাদের কাজ সম্পর্কে জানুক।

 

রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব, তারা যাদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করবে, তারা যেন সঠিকভাবে তাদের দায়িত্বটা পালন করেন।

 

ভোরের আকাশ/নি