অর্জুন কোচ। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মানুষটির বাড়ি ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বড়বিলার পাড়ে কোচপাড়ায়। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার ভরণপোষণ ও খরচ দেয়া বন্ধ করে দেন সন্তানরা। এখন অনেকটা অনাহারে নিঃস্ব জীবনযাপন করছেন ৮০ ঊর্ধ্ব বয়সি এই মানুষটি।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করে যা পান তাই নিজে রান্না করে এক-দুইবেলা কোনোমতে খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি। দৃষ্টি ঝাপসা, কানেও শোনেন কম। লাঠিতে ভর দেয়া ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করতেই ঠোঁটে ক্ষীণ হাসি ফুটিয়ে নিতান্ত কষ্টে অর্জুন কোচ বললেন, ‘বাঁচমু আর কয়দিন বাপ? পোলাপানের নাকি সংসার চলে না, বাপেরে খাওন দিব কেমনে।
তাগর মেলা কাম (কাজ), আমারে খাওন দিওনের সময় নাই খালি। তাই নিজে রাইন্দা-বাইড়া খাই। টাকার লাইগা ওষুধ কিনতে পারি না, শ্বাসকষ্টে ভুগতাছি মেলা দিন ধইরা। একটা ভাতার টেকা পাইতাম তাও কয়েক মাস ধইরা বন্ধ। অসুখের লাইগা গেরামে ভিক্ষা করতে যাইতে পারি না।’
বাড়িতে থাকা অর্জুন কোচের ছেলে ননী চন্দ্র কোচ বলেন, ‘সারা দিন কাম (কাজ) করি জামাই-বউ মিলা। বাবারে খাওন দিমু কহন? নিজের হেই সামর্থ্য নাই যে বাবারে খাওন-পরন দিতে পারমু। নিজেগর চলে না অহন।’
কোচপাড়ার বাসিন্দা নেপাল চন্দ্র কোচ ও মনিন্দ্র কোচ জানান, অনেক দিন ধরে কষ্ট করছেন বৃদ্ধ অর্জুন কোচ। সরকার কিংবা বিত্তবান কেউ একটু সহযোগিতা করলে শেষ জীবনে একটু শান্তিতে থাকতে পারতেন বুড়ো মানুষটা। আমরা চাই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যে কেউ সাহায্য করুক।
ভোরের আকাশ/নি