আমের মৌসুম না হলেও শেরপুরের তালুকদার এগ্রো নামের একটি ফার্মে চারা গাছের ডালে ডালে ঝুলছে থোকা থোকা আম। শুধু তাই নয়, এ আম বেশ উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। ওই এগ্রো ফার্মের মালিকপক্ষ আগামীতে শেরপুরে সর্বত্র এ আম গাছের চারা ছড়িয়ে দিয়ে অসময়ে আমের চাহিদা মেটাতে পরিকল্পনা করেছে।
ইতোমধ্যে ওই ফার্মে ১২০০ আম গাছের মধ্যে প্রায় ৪০টি বারোমাসি আমের চারা গাছ রয়েছে। কলম থেকে রোপিত এ চারা গাছে দুই বছরের মধ্যেই আমের ফলন আসায় বেশ আশা জাগিয়েছে ওই ফার্মের মালিককে। স্থানীয়রাও গাছে গাছে থোকা থোকা আম দেখে আশ্চর্য হয়ে তারাও এ গাছ রোপণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে ওই বাগান ঘুরে দেখা যায়, এখন বাংলা আশ্বিন মাস এবং ইংরেজি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ। গাছে গাছে এখন তাল পাকার হিড়িক। এদিকে শেরপুরের তালুকদার এগ্রো ফার্মের দেশি-বিদেশি মিশ্র ফল বাগানে প্রায় অর্ধশত আম গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম। গত কয়েক বছর আগে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের কেন্দুয়ারচর গ্রামে ঢাকায় চাকরিরত দুই প্রকৌশলী বন্ধু আব্দুল মান্নান এবং সোহেল আহমেদ প্রায় ৫ একর জমিতে গড়ে তুলেন ‘তালুকদার এগ্রো’ নামে একটি দেশি-বিদেশি মিশ্র ফল বাগান। এখানে বিভিন্ন ফল গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৌসুমী এবং বারোমাসি প্রায় ৪৬ জাতের আমের চারা রয়েছে।
যদিও চারাগুলো দুই বছর আগে রোপণ করা হয়। তারপরও দেড় বছরের মাথায় মৌসুমী আম উৎপাদন হয় প্রায় এক টন। আর এখন প্রায় ৪০টি গাছে রয়েছে বারোমাসি আম। এর মধ্যে থাই কটিমন এবং বারি-৪ জাতের আম গাছ রয়েছে বেশি। এর পাশাপাশি মৌসুমী আমের মধ্যে বারি-১১, আম্রপলি, ফজলি, ল্যাংরা, হিম সাগরসহ প্রায় ৪৬ জাতের আম গাছ রয়েছে। বারোমাসি আম খেতে সিজনাল আমের চেয়েও বেশ সুস্বাদু এবং এর চামড়া একটু পুরু হওয়ায় এ পাকা আম প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই রেখে খাওয়া যায়।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা হিরা জানান, এ তালুকদার এগ্রো ফার্ম থেকে এলাকায় বারোমাসি আমের ফলন ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এ বাগানের গাছগুলো মাতৃগাছ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এ গাছ থেকে গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে এলাকায় এ জাতের আম সম্প্রসারণ করা হবে।
তালুকদার এগ্রোর পরিচালক সোহেল আহমেদ বলেন, আমরা বেশ খুশি বারোমাসি আমের ফলন দেখে। তাই আমরা ভাবছি এলাকায় এ বারোমাসি আমের আবাদ ছড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যতে স্থানীয়ভাবে অসময়ের আমের চাহিদা মেটাব।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, শেরপুর অঞ্চলে অসময়ের ফল বাগান নিয়ে বেশ আশাবাদী আমরা। ইতোমধ্যে সদর উপজেলার একটি মিশ্র ফল বাগানে এ বারোমাসি আম উৎপাদন করে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন।
আমরাও থাই কাটিমন এবং বারি-৪ জাতের আমের উৎপাদন বাড়াতে চাষিদের উৎসাহ দিয়ে যাব। যাতে আগামীতে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে অসময়ে আম চাষ করে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পারে।
ভোরের আকাশ/নি