বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ধানের ক্ষেতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে আমন ধানের পাতাগুলো সাদা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ধানের ফলন কমে যাওয়ার শঙ্কায় দিশাহারা কৃষক। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর পোকার আক্রমন দমন করা সম্ভব। সে বিষয়ে মাঠে কাজ করা হচ্ছে।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে রোপণ করা কৃষকের আমন ধানগুলো বেড়ে উঠেছে। ফলে বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার মাঠগুলো ভরে উঠেছে সবুজের সমারোহে। জানান দিচ্ছিল বাম্পার ফলনের। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই কৃষকরা তাদের আমন ক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার শিকার হচ্ছেন। কয়েক দিন আগে বগুড়ার উপজেলার বিভিন্ন মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। যা এখন ফসলহানির পথে হাঁটছে। অথচ আমন ধান রোপনের সময়ও তারা ভোগান্তিতে ছিলেন। তখন অনাবৃষ্টির কারণে তারা শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে চুক্তি সাপেক্ষে জমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই কৃষকের আমনের ক্ষেতে হানা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পোকা। এতে সদ্য আধাপাকা আমন ধানের পাতাগুলো মরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। সবুজ ধান ক্ষেতগুলো এখন মরা খড়ের ক্ষেত মনে হচ্ছে। এতে ফুলে বের হওয়া ধানগুলো চিটা হয়ে যাওয়ার ধারণা করছেন কৃষকরা। ফসলহানির শঙ্কায় কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পরেছেন। তবে ক্ষতিকর পোকা দমনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক শুরু করেছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাগন। তাদের পরামর্শে এখন কৃষকরা তাদের জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের ইমরান হোসেন রুবেল জানান, এ বছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে শ্যালো মেশিনে পানি দিয়ে আমন ধান রোপণ করেছেন। এর মধ্যে ১ বিঘা জমির আমন ধান বাঙালি নদীর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ৩ বিঘা জমির ধানে পোকার আক্রমণ হয়েছে। এতে তার আধাপাকা ধানগুলোর পাতা মরে যাচ্ছে। সবুজ ধানক্ষেত এখন সাদা হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ধানগাছে তিনি ৪ বার কীটনাশক স্প্রে করেছেন। প্রতিবার তিনি ২,১০০ টাকার ওষুধ ক্রয় করেন। কৃষাণ খরচসহ তার প্রতি স্প্র্রেতে ২,৫০০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। উপজেলার অন্য কৃষকদেরও একই ধরনের সমস্যা।
সারিয়াকান্দি কৃষি কর্মকর্তারা জানান, উপজেলায় এ বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২,৫০০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ১২,৫১০ হেক্টর। সম্প্রতি বাঙালি নদীর পানিতে এ উপজেলার ১৭২ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে আমন ধানই ১৫৭ হেক্টর।
এছাড়া উপজেলার ১০ হেক্টর জমির আমন ধান এখন বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, বেশ কয়েকদিন বৈরি আবহাওয়ার কারণে আমনক্ষেতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ হয়েছে। তবে রোগ দমনে প্রতিদিন আমরা কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
এছাড়া আমাদের কৃষি কর্মকর্তাগণ এ বিষয়ে মাঠে কৃষকদের সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করছেন। আশা করা যাচ্ছে তারা সুফল পাবেন।
ভোরের আকাশ/নি